নিউজবাংলা ডেস্ক:

তিন কাপ চা, ছয়টা বিস্কুট আর দুটো কেকের দাম দ্রুত মুখে মুখে হিসাব করছিল ১২ বছরের কিশোরটি। মুখে মুখে হিসাব দ্রুত করছিল কারণ এক চিলতে চায়ের দোকানে পরের জন চায়ের জন্য অপেক্ষা করছেন। দোকানে ভিড় হয়ে যাচ্ছে।

সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সমর গায়েন নামে ওই কিশোর সেক্টর ফাইভের এক তথ্যপ্রযুক্তি অফিসের সামনে তার মায়ের সঙ্গে তাদের চায়ের দোকান সামলাচ্ছিল।

মা কণিকাদেবী জানান, সেই মার্চ মাসের শেষের দিকেই করোনার জন্য স্কুল বন্ধ হয়ে গেল। তারপর থেকে বাড়িতে বসে কী করবে। বাড়িতে স্মার্ট ফোন ছিল না। তাই অনলাইন ক্লাসেরও বালাই নেই। তাই তাদের পাঁচ নম্বর সেক্টরের চায়ের দোকানে দোকানদারিটাও শুরু করেছে সমর। স্কুল চলাকালীন কোনও দিনই দোকানমুখো হয়নি সমর।

করোনা আবহে রাজ্যের স্কুলগুলোয় অনলাইন ক্লাসের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সত্যিকারে কতজন পড়ুয়া এতে উপকৃত হচ্ছে সেই প্রশ্ন ইতোমধ্যে উঠেছে। গ্রামগঞ্জে, প্রত্যন্ত এলাকায় অনেকেই অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত এই অভিযোগ বারবার উঠেছে। অনেকেই স্কুল খোলা না থাকায় মা, বাবার সঙ্গে কাজে যোগ দিয়েছে এমন তথ্যও উঠে এসেছে। কিন্তু শুধুই গ্রামাঞ্চলে নয়, অভিযোগ, শহরাঞ্চলেও বহু ছাত্র স্মার্টফোন না থাকায় পড়াশোনার সঙ্গে সম্পর্ক নেই।

সমর জানায়, তাদের বাড়ির কাছেই কৃষ্ণপুর যদুনাথ মাধবচন্দ্র হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে সে পড়ে। কণিকাদেবী বলেন, ‘স্কুল বন্ধ হওয়ার পরে স্কুল থেকে সব পড়ুরার ফোন নম্বর নিয়েছিলেন শিক্ষকেরা। আমাদের তো স্মার্টফোন ছিল না। তাই নম্বর দিইনি। তবে কয়েক দিন আগে ওর বাবা ছেলের জন্য কষ্ট করে স্মার্টফোন কিনেছে। এবার স্কুলকে ফোন নম্বর দিয়ে দেব’।

সমরের বাবা পচন গায়েন রিকশা চালান। বাড়িতে টানাটানির সংসার। কণিকাদেবী জানান, প্রথম তিনমাস লকডাউনে উপার্জন খুব কমে গিয়েছিল। তাদের দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছিল। রিকশারও সওয়ারি ছিল না। ফলে স্মার্টফোন কোথা থেকে কিনে দেবেন ছেলেকে?

কণিকাদেবী বলেন, ‘এখন আবার সবকিছু একটু একটু চালু হচ্ছে। দোকানে একটু একটু করে ভিড় হচ্ছে। তাই ওর বাবা ছেলেকে পড়াশোনার জন্য একটা স্মার্টফোন কিনে দিয়েছে’।

অঙ্কই সবচেয়ে পছন্দের বিষয় সমরের। কিন্তু বাড়িতে নিজে নিজে অঙ্ক কষতে গিয়ে অনেক জায়গাতেই আটকাচ্ছে। তাই দরকার ছিল কোনও শিক্ষকের কাছে গিয়ে একটু অঙ্ক দেখিয়ে নেওয়া। সমর বলে, ‘পাশের বাড়িতে এক জন প্রাইভেট টিউশন পড়ান। করোনার জন্য সেটা-ও বন্ধ। তবে এখন একটু একটু করে উনি পড়াতে শুরু করেছেন। দোকান বন্ধ করে ওর কাছে এখন পড়তে যাই’।

পাঁচ নম্বর সেক্টরে যেখানে সমরদের চায়ের দোকান, সেখানে একটি বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি অফিসে সর্ব ভারতীয় পরীক্ষার সিট পড়েছিল। সমর জানায়, কত পড়ুয়া এসেছিল তাদের দোকানে চা খেতে। তার-ও ইচ্ছা করে বড় হয়ে পরীক্ষা দেবে এই দাদাদের মতো। সমরের মা কণিকাদেবী বলেন, ‘আমিও চাই আমার ছেলে বড় হয়ে এই সব পড়ুয়াদের মতোই পরীক্ষা দিক। পড়াশোনা করে বড় মানুষ হোক। কিন্তু স্কুল কবে খুলবে সেই চিন্তাই এখন সব থেকে বেশি’।

স্কুল কবে খোলা হবে সেই নিয়ে নিশ্চিত কিছু না জানানো হলেও, রাজ্য সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেন, ‘স্মার্টফোন দিয়েই শুধু অনলাইন ক্লাস নয়, সাধারণ ফোনেও এখন পড়ুয়ারা ক্লাস করতে পারছে। সেই ব্যবস্থাও করেছে রাজ্য সরকার। নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে নম্বরে সাধারণ ফোন থেকে ফোন করলেই ফোনের ওপারে পড়ুয়াকে বোঝানোর জন্য শিক্ষক হাজির থাকছেন’।

তিন কাপ চা, ছয়টা বিস্কুট আর দুটো কেকের দাম দ্রুত মুখে মুখে হিসাব করছিল ১২ বছরের কিশোরটি। মুখে মুখে হিসাব দ্রুত করছিল কারণ এক চিলতে চায়ের দোকানে পরের জন চায়ের জন্য অপেক্ষা করছেন। দোকানে ভিড় হয়ে যাচ্ছে।

সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সমর গায়েন নামে ওই কিশোর সেক্টর ফাইভের এক তথ্যপ্রযুক্তি অফিসের সামনে তার মায়ের সঙ্গে তাদের চায়ের দোকান সামলাচ্ছিল।

মা কণিকাদেবী জানান, সেই মার্চ মাসের শেষের দিকেই করোনার জন্য স্কুল বন্ধ হয়ে গেল। তারপর থেকে বাড়িতে বসে কী করবে। বাড়িতে স্মার্ট ফোন ছিল না। তাই অনলাইন ক্লাসেরও বালাই নেই। তাই তাদের পাঁচ নম্বর সেক্টরের চায়ের দোকানে দোকানদারিটাও শুরু করেছে সমর। স্কুল চলাকালীন কোনও দিনই দোকানমুখো হয়নি সমর।

করোনা আবহে রাজ্যের স্কুলগুলোয় অনলাইন ক্লাসের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সত্যিকারে কতজন পড়ুয়া এতে উপকৃত হচ্ছে সেই প্রশ্ন ইতোমধ্যে উঠেছে। গ্রামগঞ্জে, প্রত্যন্ত এলাকায় অনেকেই অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত এই অভিযোগ বারবার উঠেছে। অনেকেই স্কুল খোলা না থাকায় মা, বাবার সঙ্গে কাজে যোগ দিয়েছে এমন তথ্যও উঠে এসেছে। কিন্তু শুধুই গ্রামাঞ্চলে নয়, অভিযোগ, শহরাঞ্চলেও বহু ছাত্র স্মার্টফোন না থাকায় পড়াশোনার সঙ্গে সম্পর্ক নেই।

সমর জানায়, তাদের বাড়ির কাছেই কৃষ্ণপুর যদুনাথ মাধবচন্দ্র হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে সে পড়ে। কণিকাদেবী বলেন, ‘স্কুল বন্ধ হওয়ার পরে স্কুল থেকে সব পড়ুরার ফোন নম্বর নিয়েছিলেন শিক্ষকেরা। আমাদের তো স্মার্টফোন ছিল না। তাই নম্বর দিইনি। তবে কয়েক দিন আগে ওর বাবা ছেলের জন্য কষ্ট করে স্মার্টফোন কিনেছে। এবার স্কুলকে ফোন নম্বর দিয়ে দেব’।

সমরের বাবা পচন গায়েন রিকশা চালান। বাড়িতে টানাটানির সংসার। কণিকাদেবী জানান, প্রথম তিনমাস লকডাউনে উপার্জন খুব কমে গিয়েছিল। তাদের দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছিল। রিকশারও সওয়ারি ছিল না। ফলে স্মার্টফোন কোথা থেকে কিনে দেবেন ছেলেকে?

কণিকাদেবী বলেন, ‘এখন আবার সবকিছু একটু একটু চালু হচ্ছে। দোকানে একটু একটু করে ভিড় হচ্ছে। তাই ওর বাবা ছেলেকে পড়াশোনার জন্য একটা স্মার্টফোন কিনে দিয়েছে’।

অঙ্কই সবচেয়ে পছন্দের বিষয় সমরের। কিন্তু বাড়িতে নিজে নিজে অঙ্ক কষতে গিয়ে অনেক জায়গাতেই আটকাচ্ছে। তাই দরকার ছিল কোনও শিক্ষকের কাছে গিয়ে একটু অঙ্ক দেখিয়ে নেওয়া। সমর বলে, ‘পাশের বাড়িতে এক জন প্রাইভেট টিউশন পড়ান। করোনার জন্য সেটা-ও বন্ধ। তবে এখন একটু একটু করে উনি পড়াতে শুরু করেছেন। দোকান বন্ধ করে ওর কাছে এখন পড়তে যাই’।

পাঁচ নম্বর সেক্টরে যেখানে সমরদের চায়ের দোকান, সেখানে একটি বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি অফিসে সর্ব ভারতীয় পরীক্ষার সিট পড়েছিল। সমর জানায়, কত পড়ুয়া এসেছিল তাদের দোকানে চা খেতে। তার-ও ইচ্ছা করে বড় হয়ে পরীক্ষা দেবে এই দাদাদের মতো। সমরের মা কণিকাদেবী বলেন, ‘আমিও চাই আমার ছেলে বড় হয়ে এই সব পড়ুয়াদের মতোই পরীক্ষা দিক। পড়াশোনা করে বড় মানুষ হোক। কিন্তু স্কুল কবে খুলবে সেই চিন্তাই এখন সব থেকে বেশি’।

স্কুল কবে খোলা হবে সেই নিয়ে নিশ্চিত কিছু না জানানো হলেও, রাজ্য সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেন, ‘স্মার্টফোন দিয়েই শুধু অনলাইন ক্লাস নয়, সাধারণ ফোনেও এখন পড়ুয়ারা ক্লাস করতে পারছে। সেই ব্যবস্থাও করেছে রাজ্য সরকার। নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে নম্বরে সাধারণ ফোন থেকে ফোন করলেই ফোনের ওপারে পড়ুয়াকে বোঝানোর জন্য শিক্ষক হাজির থাকছেন’।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here