নিউজবাংলা ডেস্ক:

করোনাভাইরাস এখনও বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। একটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন বের করতে বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা তাদের ভ্যাকসিন প্রার্থীদের পরীক্ষা দ্রুত করছেন। বর্তমানে প্রি-ক্লিনিকাল এবং ক্লিনিকাল পরীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে ১৩০টিরও বেশি ভ্যাকসিন রয়েছে যার ৩৮টি মানব শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা সময়ের সাথে পাল্লা দিয়েই কাজ করছেন কিন্তু গবেষকরা বলছেন, ব্যবহার উপযোগী একটি ভ্যাকসিন জনসাধারণের মাঝে চালু করতে ছয় মাসের মতো সময় নিতে পারে। এমনটাই প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এই করোনা মহামারী মোকাবেলায় প্রতিরোধ পদ্ধতিগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- মুখের কভার বা ফেস মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা এবং প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া। একটি ছোট্ট গবেষণায় দেখা গেছে আরও একটি উপায় রয়েছে যা COVID-19 আক্রান্তের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে।

jagonews24

চশমা পরলে সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস পেতে পারে
চীনের একটি গবেষণায় দেথা গেছে যে, চশমা পরা লোকেদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কিছু অংশে কম। এটি একটি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা, যা অল্প সংখ্যক মানুষের ওপর করা হয়েছিল। এই গবেষণা প্রকাশ করেছে জ্যামা অপথ্যালমোলজি। গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে চীনের সুঝাইয়ের সুঝৌ জেংদু হাসপাতালে যেখানে হুবেইতে ২৭৬ জন অংশগ্রহণকারীকে পর্যবেক্ষণ করেছেন গবেষকরা।

অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে কতজন চশমা পরেছিল, তারা এটি কতক্ষণ পরেছিল এবং কেন তারা চশমা পরেছে। গবেষকরা দেখেছেন যে ৩০ জন অংশগ্রহণকারী (১১ শতাংশ) চশমা পরেছিলেন এবং তাদের মধ্যে মাত্র ১৬ জন (৫.৮ শতাংশ) মায়োপিয়া থাকায় দিনে আট ঘণ্টারও বেশি চশমা পরতেন। গবেষকরা এই তথ্যগুলো পূর্ববর্তী একটি গবেষণার সাথে তুলনা করে দেখেন যে হুবাই জেলার ৩১.৫ শতাংশ লোকের মায়োপিয়া ছিল এবং তারা সবাই চশমা পরতেন।

jagonews24

গবেষণার ফলাফল
পরিশেষে গবেষকরা বলছেন, বিশাল জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও তুলনামূলকভাবে মায়োপিয়ায় আক্রান্ত মানুষেরা (যারা চশমা পরতেন) করোনায় কম আক্রান্ত হয়েছে । চশমা ব্যবহারের ফলে মানুষেরা চোখে কম স্পর্শ করে যা সংক্রমণের ঝুঁকিও কিছুটা হ্রাস করে। যেহেতু গবেষণাটি খুব অল্প মানুষের ওপর করা তাই এর ফলাফল তেমন গুরুত্ব বহন করে না। মায়োপিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির তথ্য পূর্ববর্তী গবেষণা থেকে নেয়া, হুবাইর বর্তমান জনসংখ্যা থেকে নয় ।

গবেষণার সীমাবদ্ধতা
গবেষণার সীমাবদ্ধতা হিসেবে, জ্যামা যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অফ মেডিসিনের মহামারী বিশেষজ্ঞ লিসা এল ম্যারাগাকিসকে তার মতামত দিতে বলেছিলেন। ডাঃ লিসা বলেন, যেহেতু গবেষণাটি মহামারীর প্রথম পর্যায়ে সেহেতু হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্বসহ অন্যান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার তথ্যগুলো নড়বড়ে ছিল। তিনি আরও বলেন, করোনা প্রতিরোধে যেখানে নড়বড়ে তথ্যগুলো এখন মূল ভিত্তি সেখানে চোখের সুরক্ষা ব্যাপারটা জনসাধারণের জন্য একটু কঠিন করে তোলে।

jagonews24

করোনাভাইরাস ঝুঁকি কমাতে আপনার কি চশমা পরা উচিত?
ফেস শিল্ড এবং ফেস মাস্কগুলো ছাড়াও, সুরক্ষা জন্য পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম) কিটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চোখের শিল্ড বা গগলস সাধারণত হাসপাতালের অ্যারোসোলগুলোর সংস্পর্শ রোধে কাজ করে কিন্তু সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে চশমার কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

গবেষকরা বলছেন, করোনা প্রতিরোধে চশমা কার্যকরী কি-না এই ব্যাপারে আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে চশমা পরে থাকার কারণে মানুষ চোখ ঘষতে বা তাদের চোখ স্পর্শ করতে কম প্রলুব্ধ হন। হয়তো খুব শীঘ্রই প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসাবে চশমা পরার পরামর্শ দিতে পারে গবেষকরা।বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত যে, যারা চশমা পরতে অভ্যস্ত নন তারা অসর্তকবশত বারবার চশমা স্পর্শ করে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here