এইচআইভি (এইডস) এমন এক ধরনের মরণ ভাইরাস, যা ক্রমশ রোগীকে মৃত্যুর পথে নিয়ে যায়। করোনার মত এইচআইভিও এক আরএনএ ভাইরাস, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ক্ষণে ক্ষণে তার রূপ বদল করে। কিন্তু সেই ভাইরাসই বিনা ওষুধে নির্মূল হল।

ঘটনাটি ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯৯২ সালে এক নারী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। কিন্তু কোনও রকম ওষুধ ছাড়াই এইচআইভি মুক্ত হলেন তিনি, বুধবার গবেষকরা এমনটাই জানিয়েছেন।

আরও জানা গেছে, এখন ৬৩ জনের ওপর গবেষণা চলছে যাদের দেহে এইচআইভি সংক্রমণ অনেকটাই রুখেছে তাদের দেহ। পরীক্ষা থেকে এটা স্পষ্ট যে, এই সকল এইচআইভি রোগীদের দেহে নিজের থেকেই এইচআইভি ভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে উঠেছে, যা গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

ন্যাচার জার্নালে এই তথ্যটি প্রকাশিতও হয়েছে। এটি কীভাবে মানবদেহ কাজ করতে সক্ষম হচ্ছে তার আপাত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জেনেটিক্সের-এর উন্নতি এবং প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলেই এই পরীক্ষার ফলাফল লক্ষ্য করা গিয়েছে। তবে এও বলা হয়েছে যারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপির মধ্য দিয়ে গিয়েছেন কয়েক বছর পর থেকে তাদের দেহেও এই ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা দেখা দিয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এইডস বিশেষজ্ঞ ড. স্টিভ ডিকস বলেন, ‘এর ফলে এটা বুঝতে পারা যাচ্ছে যে এই চিকিৎসার মাধ্যমে এইচআইভিকে হারানো সম্ভব।’

আসলে অনেক সময় এইচআইভি রোগীদের ক্ষেত্রে বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা গেল উল্টোটাই। বিজ্ঞানীদের মত আরও বেশ কয়েকটি পরীক্ষার পর হয়তো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। কারণ একজন কিংবা দু’জন দিয়ে ফলাফল বিচার করা যায় না। বিশ্বে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এই সকল রোগীর দেহে জিনোম বিশ্লেষণ করে যখন দেখা গেছে তখন ‘ব্লকড অ্যান্ড লকড’ সিকোয়েন্স দেখা গিয়েছে জিনের কয়েকটি অঞ্চলে। অর্থাৎ মানবদেহ নিজের থেকেই এইচআইভি প্রতিরোধ করতে পরিবর্তন করেছে জিনের কাঠামোতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here