নিউজবাংলা ডেস্ক:

ভয়াবহ এক বিস্ফোরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেবাননের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি সেখানে থাকা বাংলাদেশি কর্মীদেরও অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে। এমনিতেই এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা চলছিল। এর সঙ্গে যোগ হয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত আট হাজার বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরার জন্য দূতাবাসে নাম নিবন্ধন করেছিলেন।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি আগস্ট মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত লেবানন থেকে ৫৬৪ জন বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে নারী কর্মী ১২০ জন এবং পুরুষ ৪৪৪ জন। করোনার কারণে গত পাঁচ মাস ইচ্ছা থাকলেও অনেকে ফিরতে পারেননি।

২৮ বছর আগে পেট্রলপাম্পের হিসাবরক্ষণ কর্মীর কাজ নিয়ে লেবাননে গিয়েছিলেন ফেনীর আজাদ হোসেন ভুঁইয়া। স্থানীয় এক নারীকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে এখন তিনি থাকেন বৈরুত থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে। স্বামী-স্ত্রী মিলে একটি মুদিদোকান চালান। লেবাননের পরিস্থিতি সম্পর্কে আজাদ হোসেন গতকাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এক বছর আগেও মার্কিন এক ডলারের সমমান ছিল দেড় হাজার লেবানিজ পাউন্ড বা লিরা (স্থানীয় মুদ্রা)। আর বর্তমান বাজারদর (গতকালের) অনুযায়ী এক ডলার মানে সাড়ে সাত হাজার লেবানিজ পাউন্ড।

লেবাননের অর্থনীতি মূলত বিদেশে থাকা সে দেশের নাগরিকদের রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) আর পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। অন্তত দুই কোটি লেবানিজ থাকেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। ডলারের দরপতনের কারণে প্রবাসী আয়ে ধাক্কা লেগেছে। আর করোনা সংক্রমণের কারণে পর্যটনের ভরা মৌসুমেও খাঁ খাঁ করছে পুরো লেবানন।

বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, লেবাননে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশি কর্মী কাজ করেন। এর মধ্যে ৬০ হাজার নারী কর্মী। নারী কর্মীরা বিনা খরচে লেবাননে কাজের জন্য গেলেও পুরুষদের ক্ষেত্রে সোয়া এক লাখ টাকা খরচ হয়। মন্দার আগে দেশটিতে বাংলাদেশের নারী কর্মীদের গড় আয় ছিল আড়াই শ ডলার। নারীরা মূলত গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন।

লেবাননের পরিস্থিতি সম্পর্কে বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রধান আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, এক মাস ধরে ডলারের দরপতন এক জায়গায় থেমে আছে। তবে পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। এটাই এখানকার প্রধান সমস্যা। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের যেসব কর্মী ফিরেছেন, তাঁরা মার্চের আগেই নাম নিবন্ধন করেছেন। যে আট হাজার নাম নিবন্ধন করেছেন, তাঁদের বাইরে আরও কয়েক হাজার কর্মী দেশে ফিরে যাবেন বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here