নিউজবাংলা২৪ ডেস্ক
সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ব্লুটুথ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং-এর যন্ত্র্র বিতরণ শুরু হয়েছে। সরকার স্মার্টফোনে ব্যবহার করার যে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ চালু করেছে নতুন এই ব্লুটুথ যন্ত্রটি তার বিকল্প একটি ব্যবস্থা। এটি ‘ট্রেসটুগেদার’ নামে একটি টোকেন ব্যবস্থা। যাদের স্মার্টফোন নেই বা যারা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে চান না, তাদের জন্য নতুন এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।
স্মার্টফোনে এই অ্যাপ ব্যবহার করলে ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করা যাবে কিনা, তা নিয়ে কোন কোন মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করার পর নতুন এই যন্ত্রটি চালুর ঘোষণা করা হয়েছে।
এই যন্ত্রের প্রথম ব্যাচটি দেয়া হচ্ছে সেইসব বয়স্ক ব্যক্তিদের যারা ঝুঁকিতে এবং যাদের পরিবারের কেউ তাদের দেখাশোনার জন্য নেই অথবা যাদের চলাফেরার অসুবিধা রয়েছে।
এই টোকেনে প্রত্যেক টোকেনধারীকে চিহ্ণিত করার জন্য সুনির্দিষ্ট কোড বা সঙ্কেত থাকবে এবং এই টোকেন যন্ত্রে চার্জ দেয়ার প্রয়োজন হবে না। এটির ব্যাটারি কাজ করবে নয় মাস পর্যন্ত।
এই যন্ত্র ব্লুটুথের মাধ্যমে আশেপাশে টোকেন বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে ‘ট্রেসটুগেদার’ ব্যবহার করছে এমন ব্যক্তিদের সিগনাল ধরবে। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে এমন কেউ আশেপাশে আছে বলে এই যন্ত্র যদি ধরতে পারে, তাহলে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং কর্মকর্তা যন্ত্র ব্যবহারকারীর সাথে যোগাযোগ করে তাকে সতর্ক করে দেবে।
আশপাশের কারও সংস্পর্শে আসার কারণে সেই ব্যক্তি যদি কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়, তাহলে ওই টোকেন থেকে সেই তথ্য ডাউনলোড করা হবে। ব্যবহারকারীদের বক্তিগত গোপনীয়তা লংঘন নিয়ে উদ্বেগ মন্ত্রীরা ইতোমধ্যেই নাকচ করে দিয়েছেন। তারা যুক্তি দিয়েছেন যে, মানুষের গতিবিধির ওপর নজরদারি করার লক্ষ্যে এই যন্ত্র তৈরি করা হয়নি।
সিঙ্গাপুর সরকার বলেছেন যে তথ্য এই টোকেন সংগ্রহ করবে তা বিশেষভাবে সুরক্ষিত রাখা হবে এবং সর্বোচ্চ ২৫দিন তা ওই টোকেনে মজুত রাখা হবে। কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে যে এই তথ্য দূর থেকে কেউ সংগ্রহ করতেও পারবে না কারণ এই টোকেনে কোন ইন্টারনেট যোগাযোগ নেই বা সেলফোনের মত যান্ত্রিক সক্ষমতাও এর নেই। সরকার বলেছে এই টোকেনে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস ব্যবস্থা থাকছে না। ফলে আপনি কোন জায়গায় আছেন তা এই টোকেন নির্ধারণ করতে পারবে না।
সিঙ্গাপুর সরকার বলছে মার্চ মাসে তারা স্মার্টফোনে ব্যবহারযোগ্য ট্রেসটুগেদার অ্যাপটি চালু করার পর প্রায় ২১ লাখ মানুষ এটি ডাউনলোড করেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে সিঙ্গাপুরে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড যেহেতু আবার খুলে দেয়া শুরু হয়েছে, ব্যবসাবাণিজ্য দোকানপাট আবার খুলছে তাই ট্রেসটুগেদার কর্মসূচি যাতে আরও বিস্তৃতভাবে ব্যবহার করা হয়, যাতে সমাজের সব স্তরের মানুষ এতে আরও ব্যাপকভাবে অংশ নিতে পার, সেটা তারা নিশ্চিত করতে চায়।
পিসিআই নামে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক একটি ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি এই টোকেন তৈরি করেছে। তারা প্রথম দফায় তিন লাখ টোকেন তৈরি করেছে যার খরচ পড়েছে টোকেন প্রতি ২০ সিঙ্গাপুর ডলার।
রোববার সিঙ্গাপুরে নতুন করে ২১৩টি সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১১জনের সংক্রমণ হয়েছে দেশের ভেতর থেকে। বাকি সবগুলো সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে অভিবাসী শ্রমিকদের আবাসিক হস্টেলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here