নিউজবাংলা ডেস্ক :
দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আক্ষেপ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হলো এবং লাশ ৩২ নম্বরে পরে থাকল তখন একটা লোকও এগিয়ে আসার সাহস পেল না? এত বড় সংগঠন এত লোক একটা লোকও সাহস করে দাঁড়ালো না?

তিনি বলেন, এত বড় একটা ঘটনা কেউ জানলো না। কেউ দেখল না, একজনও এগিয়ে এলো না। কেন এমন হলো তার উত্তর আজও আমি পাইনি। দেশের লোক তো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিল। তখন সাহস করে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করলে জনগণকে এত খেসারত দিতে হতো না।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছেন, জেল খেটেছেন। দেশ স্বাধীন করার পর সাড়ে তিন বছরে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। এ জাতিকে দারিদ্র্যতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানি এবং এ দেশীয় পাকিস্তানি দোসররা চাননি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সফল হোক। স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এত বড় একটা সংগঠন। এত নেতা এই দলে। অথচ বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হলো, যখন তার লাশ পরে থাকল তখন সাহস করে দাঁড়ানোর মতো একজনও ছিল না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর একের পর এক ক্যু হয়েছে। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। ২১ বছর তারা বাংলাদেশের মানুষের ওপর জুলুম নির্যাতন করেছে। সাহস করে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করলে দেশের জনগণকে এত খেসারত দিতে হতো না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে সংগ্রাম শুরু করলেও তিনি জানতেন— বাঙালি জাতি শোষিত-বঞ্চিত, অধিকাংশ মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন; যাদের নিজস্ব বাসস্থান নেই, খাবারের নিরাপত্তা নেই, চিকিৎসা নেই, শিক্ষা নেই। সম্পূর্ণভাবে অবহেলিত। তার চিন্তা ছিল এই জাতির ভাগ্য তিনি পরিবর্তন করবেন। জাতিকে গড়ে তুলবেন। এমন একটি দেশ গড়ে তুলবেন যে দেশের প্রতিটি মানুষ তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে। এই লক্ষ্য নিয়েই তিনি রাজনীতি করেছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা বার বার ক্যু করে ক্ষমতায় এসেছে তারা সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় প্রতিবাদ হলে মানুষকে আর অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে হতো না।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাবেক ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here