নিউজবাংলা ডেস্ক:

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ধরে আজ বুধবার থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি, বিপণন, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর শুরু হয়েছে।

একই সঙ্গে, ইলিশ পাওয়া যায়-এমন জলসীমায় এ সময়ে অন্যান্য সব ধরনের মাছ আহরণও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়ছে।

৩৬ জেলার ১৫২ উপজেলায় ‘মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২০’ পরিচালিত হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতি বছরের মতো এ বছরও ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

১৯৮৫ সালের মাছ রক্ষা ও সংরক্ষণ বিধি (প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিশ রুলস, ১৯৮৫) অনুযায়ী নিষিদ্ধের এ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর নিষিদ্ধের সময় ছিল ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে শাস্তি দ্বিগুণ হবে।

ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময় জেলেদের ভিজিএফের (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) আওতায় চাল দেয় সরকার।

ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, নরসিংদী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, জামালপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর. চাঁদপুর, কক্সবাজার, খুলনা, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা ও ঝালকাঠি- এ ৩৬ জেলায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।

মৎস্য অধিদফতরের পরিচালক (অভ্যন্তরীণ) মো. সিরাজুর রহমানকে প্রধান সমন্বয়কারী করে ১০ সদস্যের কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। পাঁচটি বিভাগীয় মনিটরিং টিম গঠন করে বিভিন্ন জেলা মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

‘মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২০’ উপলক্ষে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষও খুলেছে মৎস্য অধিদফতর। ২২ দিন এই কন্ট্রোল রুমে দায়িত্ব পালনের জন্য কর্মকর্তাও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিষিদ্ধ সময়ে রাজধানীর বাজারে মনিটরিংয়ের জন্য মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে আটটি টিমও গঠন করা হয়েছে।

ইলিশ সমৃদ্ধ বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় কর্মরত মৎস্য দফতরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছুটিও ইতিমধ্যে বাতিল করে সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নিষিদ্ধ সময়ে সারাদেশের মাছের ঘাট, মৎস্য আড়ৎ, হাট-বাজারে অভিযান চালানো হয়।

সোমবার ‘মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২০’ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে কোনোভাবেই দেশের জলসীমায় ইলিশ আহরণের অবৈধ প্রচেষ্টা সফল হতে দেয়া হবে না। ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রে কোনোভাবেই মা-ইলিশ আহরণ করতে দেয়া হবে না। মা-ইলিশ থাকতে পারে এমন নদীতে কোনো নৌকাকে মাছ ধরতে দেয়া হবে না।’

‘নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের টহলের পাশাপাশি অত্যাধুনিক উপায়ে মনিটর করা হবে যেন কোনো নৌকা বা জাহাজ ইলিশ ধরতে না পারে। এমনকি বিদেশ থেকে কোনো মাছ ধরার যান্ত্রিক নৌযান আসলে সেটাকেও আইনানুগ প্রক্রিয়ায় আটক করা হবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here