নিউজবাংলা২৪ ডেস্ক : ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’র অভিযোগ এনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই ঘটনায় পুড়ে মারা যাওয়া এক রোগীর স্বজন। বুধবার রাতে গুলশান থানায় এই মামলা করা হয়।

গুলশান থানার পুলিশ জানায়, আগুনের ঘটনায় নিহত পাঁচজনের একজন ভারনন অ্যান্থনি পল। তাঁর জামাতা রোনাল্ড নিকি পল বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, আগুনের সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই তাঁর শ্বশুর পুড়ে মারা যান।

গত ২৭ মে ইউনাইটেড হাসপাতালের পাঁচ শয্যার আইসোলেশন ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান এক নারীসহ পাঁচজন। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা বলেছেন, তাঁরা নিহত পাঁচজনকে খাটের ওপর থেকে উদ্ধার করেন।

মামলা করার ব্যাপারে জানতে চাইলে হাসপাতালটির কমিউনিকেশন অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক সাগুফা আনোয়ার বলেন, ‘মামলার কথা আমরা শুনেছি। প্রতিষ্ঠানের আইনজীবীরা বিষয়টি দেখবেন।’

অগ্নিকাণ্ডে নিহত ভারনন অ্যান্থনি পলের ছেলে আন্দ্রে ডমিনিক পল এর আগে বলেছিলেন, অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয় এসি থেকে। সে সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এসি থেকে আগুনের একটা খণ্ড তিনি একটি ফাঁকা বিছানায় পড়তে দেখেন। কেউ একজন একটি ভেজা কাপড় ছুড়ে দেন। তাতে আগুন দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। অগ্নিকাণ্ড যেখানে ঘটেছে, সেখান থেকে সবাই চলে যান। পরে তাঁরা নিজেরাই অগ্নিনির্বাপক টেনে নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেটি কাজ করেনি। হাসপাতালের কেউ এ সময় এগিয়ে আসেননি।

আগুনের ঘটনা নিয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স একটি তদন্ত করে। ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব ও ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের নতুন করোনা ইউনিটে আগুন নেভানোর কোনো ব্যবস্থা ছিল না। হাসপাতালে রাখা যেসব সরঞ্জাম ছিল, সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। আইসোলেশেন ইউনিট থেকে রোগীর বের হওয়ার জরুরি পথও ছিল না। ৪০ ফুট বাই ৬০ ফুটের একটি কক্ষে আইসোলেশন সেন্টারটি ছিল প্লাস্টিক উডের একটি কাঠামো। প্লাস্টিক উড, স্যানটিাইজার ও অক্সিজেন—এসব কিছুই আগুনকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শুরু থেকে দাবি করে আসছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয়। তারা এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশও করে। ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও নিরাপত্তা) মেজর মো. মইনুল ইসলাম এর আগে গুলশান থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন।

গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, সব অভিযোগের তদন্ত এখন একসঙ্গে চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here