ঊষসীর আঁতুড় ঘর
উত্তম কুমার
_______________________________
আঁতুড় ঘরে ষোড়শী বয়সের ঘ্রাণ বিলীন হয়েছে ঊষসীর
ভাঙা ঘরের ছেঁড়া কাঁথার ভিতর দিয়ে আধখানা বেলে চাঁদ আগন্তুকের কাঁচা শরীরে
আজকের চাঁদ অন্য রকম লাগে ঊষসীর কাছে।
দূরের সরোবর হয়ে ধেয়ে আসা ঠাণ্ডাবাতাস আমার উঠোনে;
গভীর রজনীতে সওদাগরের পানসী নৌকায়গুণ টানে মাঝি,
আমি অন্তরের অতলে শুনি মাঝির কাঁদামাখা পায়ের শব্দ।
বিহগের ডাকে দুষ্টু-মিষ্টি হেসে নড়েচড়ে ওঠে বুকে লেপটা থাকা আমার নবজাতক নতুন পায়রা।
গ্রাম্য বধূর ঢেঁকীতে ধানবানার আতব চাউলের পৌষের ঘ্রাণ আমার আঁতুড় ঘরে।
কুুপি বাতিটা নিভু নিভু জ্বলে
মাথার উপর,
কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলীর আবছা আলোয় ষোড়শী ঊষসীর তৃপ্ত মুখচ্ছবি,
রক্তশূন্য ক্লান্ত শরীরে কুঁড়েঘরে নবজাতকের কান্নার শব্দ হলো মায়ের প্রাণবায়ু
মাতৃত্বের এমন কষ্টের মাঝেই লুকিয়ে থাকে স্বর্গীয় সুখ।
বেতকাঁটার বেষ্টনী মোড়ানো একটি পাশ,
যেন অশুভ কোনো ছায়া স্পর্শ করতে না পারে,
ধনে মানে সম্মানে বেঁচে থাকুক আমার সন্তান পৃথিবীর তরে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here