ক্রীড়া ডেস্ক :

ওহ সাকিব! তাঁর বোলিং পরিসংখ্যানটা দেখুন- সাত ওভারে ২৯ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট। ব্যাট হাতে অর্ধশতকের পর বল হাতে ধসিয়ে দিলেন আফগানিস্তাকে। তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা বোলিংয়ে ২০০ রানে গুটিয়ে গেল আফগানিস্তান।

৬২ রানের বড় জয় নিয়ে সেমিফাইনালে খেলার আশা জিইয়ে রাখল বাংলাদেশ। ২৬৩ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে ৪৭ ওভারে ২০০ রানে গুটিয়ে গেল আফগানিস্তান। আগে ব্যাট করে সাত উইকেটে ২৬২ রান করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৩ রান করেন মুশফিকুর রহিম। সাকিব করেন ৫১ রান।

উদ্বোধনী জুটিটা ভাঙেন সাকিব। ১১তম ওভারে বল করতে আসেন সাকিব আল হাসান। ওই ওভারের শেষ বলে রহমত শাহ ক্যাচ দেন তামিমকে। এরপর যখনই সাকিব আসেন গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান।

বোলিংয়ে এমনই আক্রমণাত্বক ছিলেন সাকিব যে প্রথম চার ওভারে মাত্র চার রান দেন। নিজের চতুর্থ ওভারের সময় সিলি পয়েন্টে দাঁড় করিয়ে দেন লিটন দাসকে। আসগর আফগান অসহায়ের মতো ছয়টি বল ফেরালেন!

দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলেন অধিনায়ক গুলবাদিন। ২৯তম ওভারে গুলবাদিনকে আউট করেন সাকিব। শর্ট মিড অফে লিটনকে দাঁড় করান মাশরাফি। এতেই কাজ হয়। সোজা লিটনের কাছে ক্যাচ দেন গুলবাদিন। এরপরই আসেন নবি। ভারতের সঙ্গে যিনি শেষ পর্যন্ত লড়াই করেন। একটি বল পরেই নবিকে বোল্ড করেন সাকিব। শূন্য রানে ফেরত যান তিনি।

থিতু হতে চেয়েছিলেন আসগর আফগান। ৩৮ বলে ২০ রান তুলেও নিয়েছিলেন। সেই আসগরকে আউট করেন সাকিব। ইকরাম আলিখিলকে দারুণ ভাবে রান আউট করেন লিটন দাস।

রশিদ খান ও দৌলত জাদরানকে ফেরান মুস্তাফিজ। বলের পর ব্যাট হাতেও ব্যর্থ ছিলেন রশিদ। মাত্র দুই রানে আউট হন তিনি।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মুস্তাফিজ দুটি উইকেট লাভ করেন। মোসাদ্দেক ও সাইফউদ্দিন একটি করে উইকেট পান।

লড়েছেন লড়াকু মুশফিক। অল্পের জন্য টানা দ্বিতীয় শতকটি পেলেন না তিনি। তাতে কী? দলের মজবুত ভিত গড়তে রেখেছেন মূল ভূমিকা। ৮৭ বলে ৮৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন মুশফিক।

শেষটা দারুণ করেছেন মোসাদ্দেক। ২৪ বলে ৩৫ করেছেন, যার মধ্যে ছিল চারটি চার। ৫০ ওভারে সাত উইকেটে ২৬২ রান করেছে বাংলাদেশ।

আলিম দারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বিদায় নেন লিটন দাস। পরে তামিমও বিদায় নেন। সাকিব আর মুশফিক হাল ধরেন। ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতাটা রেখেছেন সাকিব আল হাসান। আজও তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ঝকঝকে অর্ধশতক। তবে ইনিংসটা বড় করতে পারেননি সাকিব। মুজিবের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। ৬৯ বলে ৫১ রান করে আউট হন তিনি।

মুশফিক মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেলে গেছেন। রশিদ-মুজিবরা তাঁকে পরাস্ত করতে পারেননি। ৮৭ বলে ৮৩ রানের ইনিংসে ছিল চারটি চার ও একটি ছয়ের মার। মুশফিক আউট হন ৪৯তম ওভারে। দাওলাত জাদরানের বল মারতে গিয়ে নবিকে ক্যাচ দেন তিনি।

মোসাদ্দেক শেষদিকে দারুণ একটি ইনিংস খেলেন। সময়োপযোগী ওই ইনিংসটাই তাঁর কাছ থেকে চাইছিল পুরো বাংলাদেশ। সেটাই করলেন মোসাদ্দেক। যার ওপর ভিত্তি করে ২৬২ করল বাংলাদেশ। শেষ বলে অবশ্য বোল্ড হয়ে যান তিনি।

সাকিবের পর মাঠে গেলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু আলিম দারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের শিকার হলেন তিনিও। এলবিডব্লিউর রিভিউতে পুরো যাচাই না করেই তাঁকে আউট দেন আলিম দার।

২০১৫ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভুল সিদ্ধান্ত দেন আলিম দার। চলতি বিশ্বকাপেও এমন কাণ্ড আবারও করলেন তিনি। ওপেনার লিটন দাসের বলটি মাটি থেকে তুলে উল্লাস করতে থাকেন হাসমতউল্লাহ শহিদি। ফিল্ড আম্পায়াররা আউট দিয়েও থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত চান। রিপ্লেতে পরিষ্কার দেখা যায়, মাটি স্পর্শ করা বল তুলেছেন শহিদি।

থার্ড আম্পায়ার সিদ্ধান্ত দেন আউট! আর ওই থার্ড আম্পায়ারই আলিম দার!

টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আফগানিস্তান। সৌম্যের পরিবর্তে তামিমের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন লিটন দাস। স্পিনার মুজিব, পেসার জাদরানের ওপর শুরুতেই চড়াও হন লিটন। ১৭ বলে ১৬ করেন, যার মধ্যে ছিল দুটি চারের মার। সেই লিটনই বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আউট হন পঞ্চম ওভারে, মুজিবের বলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here