নিউজবাংলা ডেস্ক:
সিলেট এমসি কলেজে ছাত্রাবাসে স্বামীর সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সঙ্গে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা । এরই মধ্যে তাদের ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। এদিকে ঘটনার প্রায় দুইদিন পেরিয়ে গেলেও কেন আসামীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সর্বত্র। শুধু তাই নয়, সিলেটসহ সারাদেশে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
গতকাল শনিবার ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে ৬ ছাত্রলীগ নেতাসহ মোট ৯জনের বিরুদ্ধে সিলেট শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া পুলিশের অভিযানের পর ছাত্রলীগ নেতা সাইফুরের কক্ষ থেকে বেশকিছু অস্ত্র পাওয়ায় আরো একটি মামলা হয়।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ী এলাকার এক দম্পত্তি শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজেদের গাড়ি নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে যান। তারা প্রথমে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন।পরে তারা এমসি’র শতবর্ষী ছাত্রাবাস দেখতে যান। প্রাইভেট গাড়ি নিয়েই তারা ক্যাম্পাসে ঢুকেন। রাত তখন আটটা। এ সময় ছাত্রলীগের রঞ্জিত গ্রুপের কর্মী সাইফুর ও রনির নেতৃত্বে ৯-১০ জন কর্মী ওই দম্পত্তির কাছে আসে। এসেই তারা জোরপূর্বক স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সঙ্গে নিয়ে যায় গাড়িও। পিছু পিছু স্বামী দৌড়ে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রীকে সাইফুর ও রনির নেতৃত্বে হোস্টেলের নতুন ভবনের সামনে ধর্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছে। এ সময় তিনি বাধা দেন। তাকে ছাত্রলীগ কর্মীরা বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে বেঁধে রাখে। এরপর প্রাইভেট কারের ভেতরেই তারা পর্যায়ক্রমে ওই বধূকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় গৃহবধূ ও তার স্বামী চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করে। এ ঘটনার খবর পেয়ে রাত ১০ টায়ই ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিলেট মহানগর পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) সোহেল রানা। এরপর থেকে পুলিশ ধর্ষকদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। রাতেই পুলিশের একটি দল নবনির্মিত হলের শাহ্ রনির ২০৫ নম্বর কক্ষ ও ৪ নম্বর ব্লকের সাইফুরের কক্ষে অভিযান চালায়। এ সময় সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে- সাইফুরের কক্ষ থেকে পুলিশ একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও রনির কক্ষ থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় ভোররাত ৪ টার দিকে ধর্ষিতার স্বামী ও নগরীর শিববাড়ী এলাকার বাসিন্দা বাদী হয়ে শাহ্পরাণ থানায় মামলা করেন। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এজাহারভুক্ত আসামিরা হলো, এম. সাইফুর রহমান, শাহ্ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত, বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র। তবে শাহ্ রনি গত বছর এমসি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করলেও হলের রুম তার দখলেই ছিল। আর সাইফুর শিক্ষকদের বাংলো দখল করে বসবাস করতো।