বিনোদন ডেস্ক:
আবার পর্দায় ফিরলেন অনিল কাপুর ও মাধুরী দীক্ষিত জুটি। গত মাসে এই জুটির ছবি টোটাল ধামাল মুক্তি পায়। ছবিটি মুক্তির আগে মুম্বাইয়ের এক পাঁচ তারকা হোটেলে বলিউডের ‘ধকধক গার্ল’ মাধুরী দীক্ষিত মুখোমুখি হন কয়েকজন ভারতীয় গণমাধ্যমকর্মীর। সেই আলাপচারিতায় উঠে এল মাধুরীর চলচ্চিত্রজীবন ও তাঁর একান্ত ব্যক্তিজীবনের কথাও।
দীর্ঘদিন পর আপনি ও অনিল কাপুর একসঙ্গে কাজ করলেন। কতটা বদলেছেন অনিল কাপুর?
আমি যখন থেকে অনিল কাপুরকে দেখছি, তখন থেকে এ পর্যন্ত তাঁর মধ্যে সেই একই তারুণ্য খুঁজে পাই। দুনিয়া বদলেছে, কিন্তু তাঁর কোনো বদল হয়নি। তিনি সত্যি ব্যতিক্রম। আজও অনিল কাপুর একগাল হাসি নিয়ে অন্যকে হাসাতে হাসাতে কাজ করেন। তিনি যখন সেটে আসতেন, এনার্জিতে ভরপুর থাকতেন। এমনকি সারা দিন তাঁর মধ্যে একই এনার্জি থাকত।
আপনাকে সেভাবে সিনেমায় দেখা যায় না। আপনি কি ছবির প্রস্তাব কম পাচ্ছেন?
সে রকম কিছু নয়। আমার কাছে অনেক চিত্রনাট্য এসেছে। কিন্তু আমি আমার মনের মতো চিত্রনাট্য পাচ্ছিলাম না। আমি আমার নাচকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এ ছাড়া আমার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। একজন কর্মজীবী মা হিসেবে নিজেকে ব্যালেন্স করা জরুরি।
আপনার আগামী ছবি ‘কলঙ্ক’তে বরুণ ধাওয়ান, আলিয়া ভাট, আদিত্য রয় কাপুরের মতো এই প্রজন্মের অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করছেন। তাঁদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
দারুণ অভিজ্ঞতা। এই প্রজন্মের তারকারা খুবই অনুশাসনের মধ্যে থাকে। সময়ের খেয়াল রাখে আর সময়কে সম্মান করে। আজকের অভিনেতারা ছবি সম্পর্কে খুবই সচেতন। আমরা যখন কাজ শুরু করেছিলাম, তখন এত কিছু জানতাম না। এখনকার অভিনেতাদের সিনেমা সম্পর্কে জ্ঞান আছে, গ্রুমিং দুর্দান্ত। সেটে তারা আমাকে জিজ্ঞেস করে, আমরা তখন কীভাবে একসঙ্গে একাধিক ছবি করতাম? দুটি শিফটে কী করে কাজ করতাম? এসব কিছু নিয়ে তারা অনেক প্রশ্ন করে। এই প্রজন্মের অভিনেতারা একসঙ্গে কখনো দুটি ছবিতে কাজ করে না। একসময় একটাই ছবি করে। এর ফলে তারা তাদের অভিনীত চরিত্রের জন্য নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করতে পারে। এটা এই প্রজন্মের শিল্পীদের খুব ভালো চর্চা।
অভিনেত্রীর পাশাপাশি আপনি এখন প্রযোজকও। এই নতুন রোল আপনার জন্য কতটা চ্যালেঞ্জিং?
হা হা হা। এই নতুন চরিত্র আমার জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং। মারাঠি ছবি ১৫ আগস্ট প্রযোজনা করেছি। আমি ‘টোটাল ধামাল’ আর ‘কলঙ্ক’ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম বলে আমার স্বামী সব প্রযোজনার কাজ সামলেছেন। তাঁর সাপোর্ট সব সময় পেয়ে এসেছি।
আপনার স্বামী শ্রীরাম নেনে তো একজন চিকিৎসক। তাঁর পক্ষে প্রযোজক হওয়া নিশ্চয়ই সহজ ছিল না?
একদমই তা নয়। চলচ্চিত্র প্রযোজনার ব্যাপারে তাঁর ধারণা খুব ভালো। তিনি চিকিৎসক হলেও তাঁর মধ্যে এক শিল্পী মানুষ লুকিয়ে আছে। তাঁর মধ্যে একাধিক প্রতিভা আছে। একসঙ্গে একাধিক কাজ করতে পারেন। যেখানেই নিজের বুদ্ধি প্রয়োগ করেন, সেই কাজটাই তাঁর দারুণ হয়। তাঁর একবার গিটার শেখার ইচ্ছা হলো। গিটার শেখা শুরুও করলেন। তিন মাস পর তাঁর গিটার বাজানো শুনে আমি অবাক হয়ে যাই।
সন্তানদের কাছে আপনি কেমন মা?
ওদের কাছে আমি এক ‘কুল মম’। ছোটবেলায় ওরা আমাকে একটা নোট লিখেছিল—‘মম, হোয়াই ইউ আর অ্যাক্টিং ক্রেজি?’ কিন্তু এখন ওরা একটু বড় হয়েছে। রায়ন এখন ১৩ বছরের আর এরিনের বয়স ১৫। এখন ওরা ভালোভাবেই জানে যে ওদের মা অভিনেত্রী। ওদের এসব এখন ‘কুল’ লাগে।
আপনার সন্তানদের অভিনয়ের প্রতি উৎসাহ আছে?
আমার দুই সন্তানের বিজ্ঞানের প্রতি খুব আগ্রহ। ওদের বাবার কাছ থেকে এটা পেয়েছে। আর আর্টের ক্ষেত্রেও তারা আগ্রহী। এই দিকটা আমার কাছ থেকে পেয়েছে। শেষ পর্যন্ত ওরা কী করবে, তা আমার জানা নেই।