নিউজবাংলা ডেস্ক
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, যারা জনগণের কণ্ঠরোধ করেছে, ভোটের অধিকার হরণ করেছে, তাদের প্রতি জনগণের ক্ষোভ উপচে পড়ছে। নরঘাতক-নরপশু গুজরাটের কষাই মোদি বন্দনার প্রতিবাদ জানিয়েছে জনগণ । তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, তিনি আবদ্ধ ঘরে বাস করে আলো দেখতে পান না, তিনি না বুঝেই জনগণের ইচ্ছের বিরুদ্ধে মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
তিনি আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয়োজিত কণ্ঠরোধ, হত্যা-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সংহতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। দলের সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জুর সঞ্চালনায় ও আহবায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরীয়া, প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহিম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অব) হাসান নাসিম, মেজর (অব) আব্দুল ওয়াহাব মিনার, ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে সম্মান করি, ভালোবাসি। ওমানের বাদশাহের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ‘গান্ধী শান্তি’ পুরস্কার গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকে খাটো করেছেন। গত কয়েকদিনের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরেও মত প্রকাশ করতে গিয়ে তরুণদের রাজপথে জীবন দিতে হয়। মোদী সাম্প্রদায়িকতা্র বিষবাষ্প ছড়িয়েছেন, তার অতীত ও সকল তথ্য না জেনে মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মোদী বন্দনা করে কী পেয়েছেন? পেয়েছেন অশ্বডিম্ব । তিনি সকল দল মতের লোক নিয়ে একটি শোকযাত্রা আয়োজন করার আহবান জানান।
প্রফেসর দিলারা চৌধুরী বলেন, প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের রয়েছে। জনগণের সে অধিকার রাষ্ট্র কেড়ে নিতে পারে না। ট্রাম্পের আগমনে ইউকে-তে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদ করেছিল, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধর্মেরও অঙ্গ। আমরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই কিন্তু কারো আধিপত্য আমরা স্বীকার করি না। আমাদের গৌরবের ইতিহাস আছে । যে পরাশক্তি আমাদের মাঝে ভেদাভেদ তৈরি করেছে তাদের ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে, আমাদের ঐক্যবন্ধ হয়েই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ড. রেজা কিবরীয়া বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর আমরা দেখছি কিছু লোক ব্যাংক লুট করার স্বাধীনতা পেয়েছে, শিক্ষা ব্যাবস্থা ধ্বংস করার স্বাধীনতা পেয়েছে, ইতিহাস বিকৃত করার স্বাধীনতা পেয়েছে, অর্থপাচার করার স্বাধীনতা পেয়েছে। এই সরকার অত্যাচারী অসৎ আর খুনী সরকার। করোনার বছরে সাতকোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। তিনি বলেন, জিডিপি দিয়ে একটি সরকারে সার্টিফিকেট দেয়া যায় না। যারা সন্তানদের খাওয়াতে পারে না এটা তাদের প্রতি উপহাস। সরকার যদি উন্নয়ন করেই থাকে তবে অর্থবহ নির্বাচনে যেতে তাদের এতো ভয় কেন। সোস্যাল মিডিয়া কন্ট্রোল করে ইতিহাস বিকৃত করে পার পাওয়া যাবে না।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে বলে জনগণের চেতনাকে হরণ করা যাবে না। জঙ্গী কাহিনি আর চলে না। আমরা ইতিহাসের ক্রসরোডে দাঁড়িয়ে আছি। হেফাজতের অনেক বিষয়ে আমি একমত না হলেও আমি বলব হেফাজত সরকারের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। এখন একটি রাজনৈতিক ফরমুলেশন দরকার। যার যার অবস্থান থেকে একযোগে মাঠে নামতে হবে। ডাকাত ও খুনী সরকারকে ক্ষমতায় রাখা যাবে না। এটা একটা মিয়ানমার গভঃমেন্ট। স্বাধীনতার দিনে রক্ত ঝরানোর বেদনা আমাদের মন থেকে এতো তাড়াতাড়ি মুছে যাবে না।
জেনারেল ইব্রাহীম বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হয়নি। যে মা সন্তান প্রসব করল সে মা সন্তান লালন পালনের দায়িত্ব পেল না। এখন বিভেদ ভুলে মতৌক্যে পৌছতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকরাও নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। এই সরকারের সকল অপকর্ম আন্দোলনকারীদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করে। তারা অনির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়েই সবসময় গৃহপালিত বিরোধীদল করতে চায়।