নিউজবাংলা ডেস্ক:

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর সামনে আসে। তখন থেকেই তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। এদিকে ট্রাম্পের করোনায় আক্রান্তের এক সপ্তাহও কাটেনি। কিন্তু তার আগেই ওভাল অফিসে কাজে ফিরেছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যক্তিগত চিকিৎসক সিন কনলি জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তার দেহে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। এমনকি চার ঘণ্টার বেশি সময় তার গায়ে জ্বরও ছিল না।

স্থানীয় সময় বুধবার এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, তিনি খুব চমৎকার অনুভব করছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, তার মনে হয় এটা আসলে ঈশ্বরের কৃপা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে তিনি যে চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন তিনি চান আমেরিকার সব নাগরিক যেন সেরকম সেবাই পান। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিজেনেরন ফার্মাসিউটিক্যালসের উৎপাদিত ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

তার দেহে গত সপ্তাহে অ্যান্টিবডির যে ককটেল প্রয়োগ করা হয়েছে তার প্রশংসা করেছেন তিনি। এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন যে, কয়েক হাজার ডোজ প্রায় প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ফেডারেল নিয়ন্ত্রকরা এখনও রিজেনেরনের ওষুধে অনুমোদন দেয়নি।

তিনি বলেন, এটা একটা ভালো বিষয় যে আমি আক্রান্ত হয়েছি। আমি এই ওষুধ সম্পর্কে আগেই শুনেছিলাম। আমি তাদের বলেছিলাম আমাকে এটা দিন। আর এটা ছিল অবিশ্বাস্য।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, তিনি জরুরি ভিত্তিতে এই ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন দিতে চান। তিনি চীনকে আক্রমণ করে আমেরিকানদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের এটার জন্য মূল্য দিতে হবে না। কারণ যা ঘটেছে তাতে আপনাদের কোনো দোষ নেই। তিনি বলেন, চীনকে চড়া মূল্য দিতে হবে…. কারণ এটা চীনের দোষ।

গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই একের পর এক হোয়াইট হাউস কর্মকর্তার আক্রান্তের খবর সামনে আসতে শুরু করে। শুক্রবার ট্রাম্পকে একটি সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনদিন সেখানে চিকিৎসা শেষে স্থানীয় সময় সোমবার হাসপাতাল থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরেন তিনি।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডির করোনায় আক্রান্তের সাম্প্রতিক খবরে হোয়াইট হাউসের স্টাফদের সম্পূর্ণ পিপিই পরিধান এবং সব ধরনের সতর্কতা মেনে চলতে বলা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সরাসরি সংস্পর্শে থাকা লোকজনকে প্রতিদিনই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে যে, তারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কীনা। এছাড়া সাপোর্ট স্টাফদের প্রতি ৪৮ ঘণ্টা পর পর পরীক্ষা করা হচ্ছে।

আগামী ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের করোনায় আক্রান্তের খবরে নির্বাচনে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অপরদিকে উতাহ অঙ্গরাজ্যের সল্ট লেক সিটিতে বিতর্ক অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হয়েছেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং ডেমোক্র্যাট দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস।

বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসন কিভাবে সাড়া দিয়েছে এবং কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই নিজের বক্তব্য শুরু করেন মাইক পেন্স।

এই ভাইস প্রেসিডেন্ট বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমদিন থেকেই আমেরিকানদের স্বাস্থ্যকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছেন।

তার মতে, দেশের জন্য ট্রাম্প যা করেছেন তা অন্য আর কোনো প্রেসিডেন্ট করেননি। তিনি চীনের সঙ্গে সব ধরনের ভ্রমণ বাতিল করেছেন। অথচ চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।

মাইক পেন্স বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি মৃত্যু হতে পারত। কিন্তু ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কারণে আরও বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। তবে তার সঙ্গে একমত নন বলে জানিয়েছেন কমলা হ্যারিস। এই বিতর্কে তারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, জলবায়ু, ট্যাক্স, বেকারত্ব, স্বাস্থ্য, অর্থনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here