হুমায়ুন কবির সোহাগ কালীগঞ্জ,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার ফয়লা গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে গৃহবধূ আরিফা খাতুন সোমাকে(২৬)হত্যার অভিযোগে কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ডে দুপুর ২ টায় ফয়লা গ্রামবাসীর আয়োজনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ঘাতক স্বামী ফরিদুল ইসলাম ও তার পরিবার কর্তৃক গৃহবধূ সোমা হত্যায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে ফাসির দাবি করা হয়।মানববন্ধন শেষে নিহতের লাশ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মিছিল করে।নিহতের পিতা নুর ইসলাম জানান,১১ বছর আগে আমার মেয়ে আরিফা খাতুন সোমাকে বিয়ে দেই ঝিনাইদহ সদর থানার সুরাট ইউনিয়নের দক্ষিণ কাস্টসাগর গ্রামের আকিদুল মন্ডলের ছেলে ফরিদুল ইসলামের সাথে।বিয়ের চার বছরের মাথায় ফরিদুল দুবাই যাই।এবার সে ৩ মাসের ছুটি নিয়ে দেশে আসার পর থেকে তার মা,বোন, বাপের সাথে এক হয়ে প্রায় ঝগড়াঝাটি করে এবং আমার মেয়েকে মারধর করত।সে মূলত ইউরোপের যেকোনো একটি দেশে যাওয়ার জন্য আমার মেয়েকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য বেশকিছুদিন ধরে চাপ দিত।আগের বার দুবাই যাওয়ার সময়ও আমি জামাই ফরিদুলকে ধার দেনা করে ২ লাখ টাকা দিয়েছিলাম।আমার আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে মেয়ে সোমা স্বামী শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের সব নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করে আসছিল। হঠাৎ করে ২৪ ডিসেম্বর শুক্রবার বেলা ৩ টা ৫২ মিনিটে আমাকে ফোন দিয়ে জামাই ফরিদুল জানাই “আপনার মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মারা গেছে”।খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে পৌঁছায় এবং কিভাবে কি হলো জানতে চাইলে জামাই ফরিদুল,তার বোন, বাপ, মা ও জিয়া নামে তাদের এক নিকট আত্মীয় আমাদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করে। ঝিনাইদহ সদর থানার হস্তক্ষেপে ফাঁড়ি পুলিশের সহযোগিতায় আমরা সেখান থেকে চলে আসি। ওই রাতেই সদর থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যায়।আজ আমরা ঝিনাইদহ মর্গ থেকে মেয়ের লাশ নিয়ে বুঝে নিয়ে নিজ গ্রাম ফয়লায় নিয়ে আসি।মাগরিব বাদ জানাজার নামাজ শেষে তাকে কবরস্থ করা হয়।সন্তানহারা পিতা নুর ইসলাম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি,তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত আরিফা খাতুন সোমার ১০ বছর বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী ফরিদুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)শেখ সোহেল রানা জানান,সংবাদ শুনে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে আসি। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের বাপের বাড়ি অবিভাবকের নিকট লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।মেডিকেল সার্টিফিকেট হাতে পেলে হত্যা মামলায় কোনো বাধা থাকবে না।