হুমায়ুন কবির সোহাগ কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি :

মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর ৫ দিনের মাথায় পাক হানাদার বাহিনী বারোবাজার ও কালীগঞ্জে নিশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়ে বিষয়খালী বাজারের সন্নিকটে পৌছালে বাংলার মুক্তিকামী জনতার সাথে ব্যাপক যুদ্ধ বাধে।আর এই যুদ্ধে তৎকালীন সময়ে অত্র অঞ্চলের জনগণই অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঐসকল বীর সেনাদের নাম আজনও লেখা আছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে। তাদের মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলায় ২০২০ সালে জিবীত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১৭৫ জন।কিন্তু বিজয়ের একটি বছর যেতে না যেতেই আমরা হারিয়েছি কালীগঞ্জের ৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।তারা হলেন উপজেলার ফারাসপুর গ্রামের মোঃ হাতেম আলী, বেজপাড়া গ্রামের মোঃআবুল হোসেন,মান্দারবাড়িয়া গ্রামের মো:ইসহাক আলী,খর্দতালিয়ান গ্রামের মোঃ আমজেদ হোসেন,মাজদিয়া গ্রামের মোঃ মুনসুর আলী,শানবান্দা গ্রামের মুন্সী হুমায়ন কবির,ফুলবাড়ি গ্রামের মোঃ শহিদুল ইসলাম, আলাইপুর গ্রামের মোঃ হাবিবুর রহমান ও দাপনা গ্রামের মোঃ জালাল উদ্দীন। কালীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ও বোনাস সোনালী ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখা কর্তৃক প্রদান করা হয়।সোনালী ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখার ম্যানেজার মোঃ কামাল হোসেন কালীগঞ্জের মৃত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা নিশ্চিত করে বলেন,গত ১ বছরে কালীগঞ্জ উপজেলায় মৃত ৯ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি তালিকা আমরা পেয়েছি।মারা যাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতার টাকা ওয়ারেশদের আবেদনের প্রক্ষিতে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাস্তবায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মমন্ত্রনালয়ে পাঠানোর পরে উক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ নিজ হিসাবে প্রদান করা হবে। কালীগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার হেলাল সদ্দার বলেন,একজন মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু মানেই ইতিহাসের একজন সাক্ষীকে হারিয়ে ফেলা। আমাদের মাঝ থেকে এভাবেই একে একে ইতিহাসের সাক্ষী হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এসব সাক্ষীর কাছ থেকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানানোর দরকার বলে আমি মনে করি। উল্লেখ্য,২০২১ সাল মহান স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী। এই মাহেন্দ্রক্ষণকে সামনে রেখে এই বছরের বিজয় দিবস উদযাপন করছে জাতি।এবারের মহান বিজয় দিবস বাঙালির জাতীয় জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্ববহ। ১৯৭১ সালে আমরা যদি স্বাধীন না হতাম, তাহলে আজও বাংলাদেশ পাকিস্তানের কলোনি হিসেবেই বিশ্বে পরিচিত হতো। ঔপনিবেশিক শাসন, শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হতাম প্রতিটি ক্ষেত্রে। সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই আমরা বঞ্চিত থাকতাম। কোনো ক্ষেত্রেই আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম না। আমরা থাকতাম লাঞ্চিত-শোষিত-বঞ্চিত।তাই যে কয়জন মুক্তিযোদ্ধা এখনো আমাদের মাঝে জিবীত রয়েছেন তাদের খোজখবর রাখা। তাদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here