হুমায়ুন কবির, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বারোবাজার ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।  ইউনিয়নটির ১৯ গ্রামসহ আশপাশের  গ্রাম থেকে আসা নিন্মআয়ের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র প্রতিষ্ঠান এটি।  কিন্তু ডাক্তার  না  থাকায় কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ।

২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগদান করেন আহসান হাবীব জিকো নামের এক জন মেডিকেল অফিসার। যোগদানের কিছু দিন পর আবার চলে আসেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

এর পর থেকে ওই এলাকার সাধারন মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।এক জন মাত্র উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার তার সাধ্যমত সেবা দিচ্ছেন। কিন্তু এই উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিয়োগপ্রাপ্ত ডাক্তার হলেন আহসান হাবীব জিকো। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পদায়ন হলেও তিনি থাকেন উপজেলা হাসপাতালে। শুধু তাই নয়। আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদ বাগিয়ে বসে আছেন আহসান হাবীব জিকো।

সরকারি সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করলেও গ্রামের মানুষদের সেবা দিচ্ছেন না তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেন, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন সিনিয়র মেডিকেল অফিসার থাকলেও জুনিয়র মেডিকেল অফিসার আহসান হাবিব জিকোকে আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদে বসিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শামীমা শিরিন লুবনা । নিজের সুবিধা বাগিয়ে নিতে তার পছন্দের লোককে এ পদে আসীন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেও তিনি নিয়মিত রোগী দেখেন না। সহকর্মী অন্যান্য ডাক্তারদের উপর চড়াও হন কারনে অকারনে। করোনাকালীন চিকিৎসাসেবার দায়িত্বে থেকেও তিনি করেছেন নানা অনিয়ম। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা রুহুল কবির নামের এক রোগির স্বজন বলেন, শুনেছি এই হাসপাতালে বড় ডাক্তার আছে। কই কোন দিন তো দেখলাম না। কোনদিন তো আসে না। বড় ডাক্তার যদি আসত তাহলে আমরা ভালো মত চিকিৎসা নিতে পারতাম। বারোবাজার এলাকার হাসেম আলী বলেন, সরকার চিকিৎসা সেবা গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসকরা সেখানে আসছেন না। এতে আমরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি সেই সাথে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্যেটি ভেস্তে যাচ্ছে। ওই এলাকার সবুর আলী বলেন, হাসপাতালে বড় ডাক্তার নাকি কালীগঞ্জ থাকে। এখানেই যদি তার কর্মস্থল হয় তবে তিনি কালীগঞ্জ উপজেলায় কি করেন?। আমাদের সেবা না দিয়ে তিনি কালীগঞ্জ হাসপাতালে থাকেন। তাহলে আমাদের সেবা কে দিবেন ? এব্যাপরে আহসান হাবীব জিকোর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র আমি যোগদান করি। করোনা কালীন ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আরএমও হিসাবে কর্মরত আছি। সেটা এখনও বহাল রয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শামীমা শিরিন বলেন, উপর মহল থেকে এ ব্যাপারে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা বলা নিষেধ আছে। যে কারনে আমি এ বিষয়ে আপনাকে কিছুই বলতে পারবো না। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম বলেন, মহামারী করোনা কালীন সময় ডাঃ আহসান হাবীব জিকোকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছে। পরবর্তীতে তাকে বারোবাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র পূর্ণবহাল করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here