হুমায়ুন কবির সোহাগ কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ):
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার তাঁত শিল্প বর্তমানে বিলুপ্তির পথে। ফলে এ উপজেলার প্রায় ৫ হাজার তাঁতী পরিবারে নেমে এসেছে চরম দুর্দিন। এই উপজেলা এক সময় ছিল তাঁত সমৃদ্ধ। প্রায় ৫ হাজার পরিবার নিয়োজিত ছিল এ পেশায়। সূতা , রংসহ এ শিল্পের সকল উপকরনের মূল্য বৃদ্ধি এবং উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর দাম তুলনা মূলকভাবে বৃদ্ধি না পাওয়ায় তাঁতীরা ক্রমাগত লোকসানের দিকে ধাবিত হয়ে এক পর্যায়ে লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এ উপজেলায় হস্ত চালিত তাঁতে তৈরী কাপড় গামছা , লুঙ্গী , শাড়ি ও ধুতি কাপড় এ উপজেলার চাহিদা পুরন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হতো। কালীগঞ্জ উপজেলার হেলাই, মনোহর পুর, নগর চাপরাইল, সিংগী, ফয়রা, বাবরা, বলিদাপাড়াসহ প্রভৃতি গ্রাম ছিল তাঁত সমৃদ্ধ গ্রাম। আগের মত সেই ঐতিহ্য তাঁতীদের এখন আর নেই। তাঁতী পরিবারের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কারনে ক্রমান্বয়ে তাঁত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বেকার হয়ে পড়েছে অধিকাংশ তাঁতী। তাঁতীরা অনেকেই পৈত্রিক পেশা ছেড়ে চলে গেছে অন্য পেশায়। এক সময় হেলাই, মনোহরপুর, নগর চাপরাইল, সিংগী, , বাবরা, বলিদাপাড়া গ্রামের শতকরা ৮০ ভাগ পরিবারে তাঁত ছিল। বর্তমানে হাতে গুনা কয়েকটি বাড়িতে তাঁত আছে। ৩০/৩৫ বছর আগে কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অধিকাংশ তাঁতী পরিবার ঋন নিয়ে রুগ্ন তাঁত শিল্পকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি । ক্রমাগত লোকসানের কারনে তাঁতসহ ভিটে বাড়ি বিক্রি করে তাঁতিদের ঋন পরিশোধ করতে হয়েছে। ফলে তারা হয়ে পড়ে নিঃস্ব। তাদের অনেকেই এখন বাপ দাদার পৈত্তিক পেশা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে তাঁতীদেরকে দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষন প্রদান করা একান্ত অপরিহার্য বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।