মো: হুমায়ুন কবির, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ২৩ বছর আগে বিজিবি’র চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। এখন বাড়িতে এসে নানা ধরনের ফলের চাষ করছি। মাঠে আমার প্রায় ৭ বিঘা জমিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের পেয়ারার চাষ করেছিলাম। প্রায় ১ বছর ধরে গাছগুলো লালনপালনের মাধ্যমে বেশ তরতাজা হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ৩১ আগস্ট সোমবার গভীর রাতে কে বা কারা আমার খেতের বেশিরভাগ ফলগাছগুলোর কলমের গোড়া থেকে ভেঙে দিয়েছে। বাকিগুলো দুমড়েমুচড়ে রেখে গেছে। এখন এ কলম থেকে আর চারা হওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমি তো কারো ক্ষতি করিনি। কিন্তু কে আমার এমন ক্ষতি করল? এতে আমার ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু যে দুষ্ট মানুষগুলো এ কাজ করেছে তাদের কী লাভ হয়েছে? কথাগুলো বললেন ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের রাড়িপাড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত ফলচাষি মশিয়ার রহমান। তিনি ওই গ্রামের ফেলু মোল্লার ছেলে। ফলচাষি মশিয়ার রহমান জানান, তিনি ১৯৯৭ সালে বিজিবি’র চাকরি থেকে অবসর নিয়ে বাড়িতে এসে ফল চাষ করছেন। এ চাষে সাফল্যও এসেছে। এ কারণে এলাকার মানুষ আমাকে একজন ফলচাষি হিসেবে চেনেন। কিন্তু এ কেমন শত্রুতা? আমার এক বিঘা ব্যয়বহুল দার্জিলিং লেবুর ১০৫টি এবং থাই পেয়ারার তরতাজা গাছের কলম ভেঙে দিয়েছে। প্রতিটি কলমের চারা প্রায় দুইশত টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে। এরপরও জমি তৈরি ও পরিচর্যা খরচ তো রয়েছে, কমপক্ষে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। দোষ যদি করে থাকি তো আমি করেছি, গাছের কী অবরাধ? কারা এমন ক্ষতি করল তা আমি দেখিনি। ফলে কাউকে দোষারোপও করা যাচ্ছে না। তারপরও আমি থানায় মৌখিকভাবে জানিয়েছি এবং পরবর্তীতে সাধারণ ডায়েরি করেছি। পুলিশ ইতোমধ্যে আমার ক্ষতিগ্রস্ত খেত পরিদর্শন করেছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক আইয়ুব হোসেন জানান, তাদের গ্রামের মশিয়ার রহমান দীর্ঘদিন ধরে মাঠে বিভিন্ন ধরনের ফলের চাষ করে আসছেন। তার পরামর্শে গ্রামের অনেক কৃষক ফলচাষে ঝুঁকেছেন। কিন্তু তার খেতের গাছগুলো যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহাঃ মাহাফুজুর রহমান মিয়া জানান, এ ব্যাপারে মুঠোফোনে আমাকে জানানোর পর স্থানীয় তত্বিপুর পুলিশ ফাঁড়িতে জানানো হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে ওই কৃষকের খেত পরিদর্শন করেছেন। তিনি আরও বলেন, কৃষকের ভরা খেত নষ্ট করলে সে ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার নয়। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।