নিউজবাংলা ডেস্ক:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে সদ্য বের হওয়া উলফাত আরা তিন্নির ওপর পাশবিক নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনায় বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইবি ক্যাম্পাস। শনিবার দুপুরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ইবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, তিন্নির মৃত্যুর ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না তার সহপাটি ও ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা। এটা কোনোভাবেই আত্মহত্যা নয়। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার মূল হোতা তিন্নির বড় বোন মুন্নির সাবেক স্বামী জামিরুলকে এখনও পুলিশ আটক করতে পারিনি। দ্রুত তাকে আটকের দাবি জানিয়ে কঠিন শাস্তির দাবি করেন তারা। এ ঘটনার বিচার না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়ে মানববন্ধনে।
এদিকে শনিবার দুপুরে উলফাত আরা তিন্নির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তিন্নির বই-খাতা আর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া নানা ক্রেস্ট-পুরস্কার। সাদামাটা তিন্নির জীবন-যাপন ছিল সহজ সরল। একটি অনুষ্ঠান থেকে বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) রাতে বাড়ি ফিরেই বর্বোরচিত হামলা আর পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যায় সে।
এদিকে তিন্নির উপর হামলার সময় হামলাকারীদের পায়ের ছাপ দেখা গেছে বাড়ির দরজায়। তারা দরজার পাশ দিয়ে দ্বিতলায় উঠে ঘরে প্রবেশ করে। জানালার গ্লাস ভেঙেও ভেতরে প্রবেশ করে কেউ কেউ। নিহত তিন্নির পরিবার ও স্বজনরা আসামিদের হুমকির মুখে রয়েছেন বলে জানিয়েছে পরিবার। তবে ঘটনার পর থেকে তিন্নির বাড়ি আর আশপাশের এলাকায় জালের মতো ছেয়ে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
প্রতিবেশীরা জানান, তিন্নি খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হোক।
ঝিনাইদহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (অপরাধ ও প্রশাসন) আনোয়ার সাইদ জানান, বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) রাতে শৈলকুপা থানা পুলিশ সংবাদ পায় একটি মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ এসে দেখে এলাকার লোকজন মেয়েটিকে নামিয়ে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিন্নি মারা যাওয়ার পর কুষ্টিয়া থানার অফিসারা তার সুরতহাল করে এবং তারপরই তার দাফন কাফন সম্পন্ন করা হয়।
পরবর্তীতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে রাতেই ৮ জনের নাম উল্লখেসহ অজ্ঞাত আরও ৫- ৬ জনকে আসামি করে শৈলকুপা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আসামিদের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
তিনি জানান, এ ঘটনায় জেলা পুলিশ খুবই তৎপর রয়েছে। আমরা আশা করি খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাকি আসামিদের ধরতে সক্ষম হব। এ ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়ে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারব বলে আমরা আশা করছি।
তিনি আরও জানান, তিন্নিকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা এখনই আমরা বলতে পারছি না। কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও আমরা পাইনি। পেলে আমরা বিষয়টি জানতে পারব। পরিবারের নিরাপত্তার জন্য তার বাড়িতে পুলিশ পাহারা দেয়া হয়েছে।