রামপ্রসাদ সরকার দীপু, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী এবং নালী এ দুটি ইউনিয়নের (ক্যানেল সংলগ্ন) ২টি সেতু এবং প্রায় ৬/৭ কি. মি. রাস্তাটি দীর্ঘদিনেও নির্মান ও পাকাকরন না করায় ওই দুই ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এছাড়া হরিরামপুর উপজেলার আংশিক এলাকার লোকজনও ওই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতাযাত করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বানিয়াজুরী এবং নালী ইউনিয়নের দুটি সড়কের বিভিন্ন স্থানে মাটি ধসে গেছে। ওই সড়কে দুটি বাঁশের সাকোর ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করছে। এদিকে বাঁশের সাকোর দু’পাশ ভেঙ্গে গেছে। কোন রকম চলাচলের জন্য বাঁশ বেঁধে দেওয়া হয়েছে সেতু দুটির উভয় পাশে। মাঝে মধ্যে সেতু থেকে ভ্যান, রিকশা, শিক্ষার্থীরা নিচে পরে গিয়ে মারাত্মক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
জানা গেছে, সাম্প্রদায়িক বন্যার মৌসুমে পানির প্রবল ¯্রােতে অল্প দিনেই রাস্তাটির বিভিন্নস্থানে মারাত্মক ক্ষতি হয়। কয়েক দফায় রাস্তায় মাটি দিলেও কোন কাজ হয়নি। বৃষ্টির পানিতে সমস্ত রাস্তায় কাঁদা জমে চলাচল করা কঠিন হয়ে পরে। চার বছর আগে বৃষ্টির পানিতে রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে মাটি সওে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হলেও তা মেরামত করা হয়নি। এ রাস্তাটি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঠাইমুরি, নালী, নয়াচর, হেলাচিয়া, শ্যমনগর, উভাযানি, কলতা, তারাইল, কুন্ডুরিয়া, চানপুর,লাটিকাটিসহ প্রায় ২০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ীদের পণ্যসামগ্রীসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহনের ক্ষেত্রে অধিক ভাড়া গুণতে হচ্ছে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদেরও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্বাধীনতার ৪৯টি বছর অতিবাহিত হবার পরেও বানিয়াজুরী-নালী সড়কের মাত্র ৪ কিমি রাস্তা জরুরী মেরামত না করায় বন্যা মৌসুমে এ অঞ্চলের লোকজনের একমাত্র বাহন হিসাবে নৌকা ব্যবহার করা হয়। নালী-হরিরামপুর-বানিয়াজুরী আংশিক লোকজনের যাতায়াতের ক্ষেত্রেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃষ্টির সময় কোন প্রকার যানবাহন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করাতো দুরের কথা লোকজন পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারেনা।
উপজেলার নালী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ খান জানান, ‘এ দুটি ইউনিয়নের সরাসরি যোগাযোগের এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবত পাকাকরন করা হয়নি। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ এবং বিভিন্ন স্থানে বড়-বড় গর্ত হয়ে যানবাহন চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পরেছে। কিন্তু এত দুর্ভোগের পরেও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আমাদের গ্রামের এলাকার বহু লোকজন দীর্ঘদিন যাবৎ ঝুঁকিপূর্ন অবস্থ্ায় এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। বাঁশের সাকো দুটি উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজার- হাজার লোকজন চলাচল করছে। জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি নির্মান করা প্রয়োজন।’
নালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মধু জানান, বানিয়াজুরী-নালী এ দুটি ইউনিয়নের সাথে সহজ যোগাযোগের রাস্তাটির দুই স্থানে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ ছাড়া স্কুল চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে চরম অসুবিধা হচ্ছে।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সাজ্জাকুর রহমান জানান, ‘আমি সরেজমিনে এলাকাটি পরিদর্শন করে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। এলাকার অভিজ্ঞ মহল উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here