তাসনিয়া মাসিয়াত, চুয়েট থেকে
প্রথমবারের মতো দেশে গুচ্ছ পদ্ধতিতে প্রকৌশল স্নাতক ভর্তিপরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০:০০ টায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) নেতৃত্বে তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব-স্ব ক্যাম্পাসে একযোগে ভর্তিপরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে চুয়েটের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র প্রদর্শন করেন চুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। এ সময় কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভাপতি ও চুয়েট পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক  ড. মো. মইনুল ইসলাম, কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমদ, রুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাসুদ রানা এবং চুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এবারের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় চুয়েট কেন্দ্রে ‘ক’ গ্রুপে ৭ হাজার ৪৫৫ জন এবং ‘খ’ গ্রুপে ১ হাজার ৪৫ জন মোট ৮ হাজার ৫০০ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। চুয়েট ক্যাম্পাসে ‘ক’ গ্রুপের ৫০০০১-৫৭৪৫৫ এবং ‘খ’ গ্রুপের ৫৮৫০১-৫৯৫৪৫ রোল নম্বরধারী শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। চুয়েট কেন্দ্রের ভর্তি পরীক্ষায় ‘ক’ গ্রুপে মোট ৭ হাজার ৪৫৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫ হাজার ১৯৫ জন উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ২ হাজার ২৬০ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। অর্থাৎ ‘ক’ গ্রুপে উপস্থিতির হার প্রায় ৭০ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ভর্তি পরীক্ষায় চুয়েটের ৯০১টি আসন, কুয়েটের ১০৬৫টি আসন এবং রুয়েটের ১২৩৫টি সবমিলিয়ে মোট ৩২০১টি আসনের বিপরীতে সর্বমোট ২৫ হাজার ৬৪৭ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। ভর্তি পরীক্ষাটি “ক” গ্রুপ (ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ) এবং “খ” গ্রুপ (ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসমূহ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগ) দুইটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে “ক” গ্রুপে মোট ২২ হাজার ৬১০ জন এবং “খ” গ্রুপে মোট ৩ হাজার ৩৭ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
“ক” গ্রুপের পরীক্ষা সকাল ১০:০০টা থেকে দুপুর ১২:৩০টা এবং “খ” গ্রুপের (মুক্তহস্ত অংকন) পরীক্ষা দুপুর ১২:৪৫ টা থেকে ১:৪৫ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।
এমসিকিউ পদ্ধতিতে “ক” গ্রুপের সাধারণ প্রকৌশল বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা ৫০০ নম্বরে এবং “খ” গ্রুপের স্থাপত্য বিভাগের জন্য অংকনে অতিরিক্ত ২০০ নম্বর সহ মোট ৭০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভর্তিপরীক্ষা সম্পর্কে চুয়েট উপাচার্য বলেন, “ভর্তিপরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আমরা সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে পরীক্ষা কেন্দ্রের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “চুয়েট, কুয়েট এবং রুয়েটের ভর্তিকমিটির সদস্যরা একত্রে বসে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করা হবে। আনুমানিক ৫-৬ দিনের মধ্যে ফলাফল দেওয়া হবে বলে আশা করছি। ভর্তির ক্ষেত্রে মেধাতালিকা এবং পরীক্ষার্থীর পছন্দের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভাগ নির্বাচন করা হবে। “
পরীক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য চুয়েট শিক্ষার্থীদের বেশ তৎপর থাকতে দেখা যায়। শহর থেকে চুয়েটের অবস্থান দূরে হওয়ায় চুয়েট কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ভোগান্তি কমাতে তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। পরীক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ, পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজে পেতে সহায়তা করা সবকিছুতেই বরাবরের মতোই আন্তরিকভাবে চুয়েট শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করে গেছেন বলে জানা যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here