নিউজবাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা ভবন ক্যাপিটল হিলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের হামলার পর ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনরা তার সঙ্গ ছাড়ছেন।

বুধবারের হামলার পর নিন্দার ঝড় উঠেছে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান শিবিরজুড়ে। এরই মধ্যে হোয়াইট হাউজের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

হামলার পর ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির অনেক নেতা সরব হয়েছেন। খবর সিএনএন ও রয়টার্সের।

৩ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রার্থী জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়ার জন্য আইনপ্রণেতারা ক্যাপিটল হিলে বুধবার অধিবেশনে বসেন। এমন সময় ট্রাম্পের শত শত সমর্থক ক্যাপিটলে ঢুকে পড়ে।

রিপাবলিকানের উগ্র সমথর্করা ক্যাপিটল হিলে ভাংচুর ও হামলা চালায়। হামলা চলাকালে ভবনের ভেতরে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করার খবর পাওয়া গেছে এবং অন্তত একজন গুলিবিদ্ধ হন। হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় চারজন নিহত হন।

কয়েক ঘণ্টা ভবন কার্যত দখল করে রাখার পর বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে ক্যাপিটল প্রাঙ্গণ ছেড়ে চলে যায়। এ হামলার প্রতিবাদে ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সারাহ ম্যাথিউস, ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের প্রধান কর্মকর্তা স্টেফানি গ্রিশাম ও হোয়াইট হাউজের সোশ্যাল সেক্রেটারি রিকি নিচেতা পদত্যাগ করেছেন।

ক্যাপিটলে সহিংসতার জেরে পদত্যাগ করে হোয়াইট হাউজের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সারাহ ম্যাথিউ বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনে কাজ করার সুযোগ আমার জন্য ছিল সম্মানের। যে নীতি আমরা বাস্তবায়ন করেছি সেগুলোর জন্যও আমি গর্বিত।

কংগ্রেসের হলে যেহেতু আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে, তাই আমাকে যা দেখতে হয়েছে তার জন্য আমি খুবই বিরক্ত। তিনি বলেন, তার পদত্যাগ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশে ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর দরকার।

ট্রাম্পের ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ম্যাট পটিঙ্গার পদত্যাগ করেছেন। তিনি জানান, ক্যাপিটলে হামলা ও বিক্ষোভকারীদের উসকানি দেওয়ায় তিনি হতাশ হয়েছেন।

রিপাবলিকান পার্টির নেব্রাস্কার সিনেটর বেন সাসে বলেছেন, এটা একটা নোংরা দিন। আমরা আমাদের শিশুদের কখনোই বলতে চাইব না যে যুক্তরাষ্ট্রের সোনালি অতীত আমাদের আছে। কারণ এটা সত্য না। আমরা এমনটা নই।

জর্জিয়ায় সিনেটের ভোটে হেরে যান রিপাবলিকান প্রার্থী কেলি লয়েফলার। তিনিও সমালোচনায় সরব।

সহিংসতার পর আবার শুরু হওয়া সিনেটে অধিবেশনে হামলার ঘটনার নিন্দা জানান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে আজকের দিনটি একটি কালো দিন হিসেবে উল্লেখ থাকবে।

সিনেটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা পেন্স সহিংসতার পুরো সময়টায় কংগ্রেসের নেতৃত্ব, পুলিশ এবং বিচার ও প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন যাতে পার্লামেন্ট ভবনের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে অধিবেশন আবার শুরু করা যায়।

তিনি বলেন, যারা আজ ক্যাপিটলে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছেন, আপনারা জয়ী হতে পারেননি। সহিংসতা কখনো বিজয়ী হয় না। স্ববাধীনতা বিজয়ী হয় এবং এটা এখনো জনগণের হাউজ। আমরা যেহেতু আবার এ চেম্বার শুরু করছি, বিশ্ব আবারও দেখবে যে, অভূতপূর্ব সহিংসতা এবং ভাঙচুরের মধ্যেও আমাদের গণতন্ত্রের দৃঢ়তা ও শক্তি কতটা মজবুত।

রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেন, আজকের এ অস্থির জনতা ছাড়াও মার্কিন কংগ্রেসের চেয়ে অনেক বড় হুমকি মোকাবিলা করেছে। তারা (সহিংস ট্রাম্প সমর্থকরা) আমাদের গণতন্ত্রকে বিঘ্নিত করতে চেয়েছিল। তারা পারেনি, তারা পরাজিত হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here