ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজে সবাইকে অংশ নেয়ার আহবান জানান তিনি।
আজ রবিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৭তম জাতীয় সমবায় দিবসের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এসময়, সকল অনাবাদি জমিকে সমবায়ের মাধ্যমে চাষের আওতায় আনার আহবান জানান শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গ্রামের মানুষকে দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি দেবার জন্য এবং গ্রামের অর্থনীতিকে আরও সচল করার জন্য একটি প্রকল্প আমরা নিয়েছিলাম যেন, কোনো জমি পরিত্যক্ত না থাকে এবং সকলেই যেন কিছু কাজ করতে পারে, সেই সুযোগটা সৃষ্টির জন্য ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প আমরা গ্রহণ করি। আমাদের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য দেশকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে তারা কী ধরণের কাজ করতে চান সে ধরণের সহযোগিতা দেওয়া এবং কেউ যদি কিছু সঞ্চয় করতে পারে, যেমন কেউ যদি ১০০ টাকা সঞ্চয় করতে পারে আরও ১০০ টাকা তাকে দিয়ে দুবছর পর্যন্ত দিয়ে তার নিজস্ব একটা মূলধন যাতে গড়ে উঠে সে ব্যবস্থাটা করে দিয়ে এবং পল্লী সঞ্চার ব্যাংকও আমরা করে দিই।’
প্রকল্পের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কাজেই আমি মনে করি এর মাধ্যমে মানুষ আস্তে আস্তে দারিদ্র্যের হাত থেকে উঠে আসছে এবং একটা প্রকল্পের সাথে আরও অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। তাছাড়া আমরা গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি সি বিডি (কনভেনশন অন বায়োলোজিক্যাল বায়োলজিক্যাল) বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কাজ যেটা জাতির পিতা করে গেছেন, সমবায় ভিত্তিক দুগ্ধ খাবার মিল্কভিটা। এর ফলে একদিকে দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধি পাশাপাশি আমাদের দেশের মানুষের বা শিশুদের পুষ্টি সমাধান করা-এটা তার একটা উদ্দেশ্য ছিলো, সেটা আমরা সম্প্রসারণের ব্যবস্থা নিচ্ছি। আপনারা জানেন, ইতিমধ্যে ফরিদপুর, বরিশাল, খুলনা জেলায় এই অঞ্চলকে কেন্দ্র করে আমরা সমবায় ভিত্তিক দুগ্ধ উৎপাদন একটা কারখানাও সেখানে তৈরি করা হচ্ছে। এই কারখানার এক দিকে গবাদি পশুর জাত উন্নয়ন এবং দুধের বহুমুখী প্রক্রিয়াজাতকরণ করা যায়-সেদিকেই লক্ষ্য রেখে এই প্রকল্পটা আমরা হাতে নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘গবেষণার ক্ষেত্রকে উন্নত করতে সবধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রেখে বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত হিসেব গড়ে তোলাই আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য।’
কৃষি উৎপাদন ও বিপননে সমবায়ের পরিধি বাড়ানোর নীতি অনুসরন করার তাগিত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমবায়ের সঠিক প্রয়োগ হলে দেশের সব চাষযোগ্য জমি থেকে সর্বোচ্চ উৎপাদন সম্ভব হবে।’
তিনি জানান, ‘গবাদী পশু ও দুধ প্রক্রিয়াজাতসহ দেশের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে নেয়া যে কোন উদ্যোগে উদ্যোক্তাদের পাশে থাকবে সরকার।’ দেশব্যাপী লক্ষাধিক সমবায় সমিতির ১ কোটির বেশী সদস্যকে সন্মিলিতভাবে কাজে লাগানোর তাগিদ দেন তিনি।
এ সময়, ২০১৬ ও ১৭ সালে সমবায় ভিত্তিক সন্মিলিত উদ্যোগ, কর্মসংস্থান ও সঞ্চয়ে বিশেষ অবদান রাখা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয় সমবায় পদক দিয়ে সমবায়কে উৎসাহিত করেন তিনি। এর আগে প্রধানমন্ত্রী সমবায় মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমবায় অধিদফতরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক অাবদুল মজিদ।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামাল উদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অারও বক্তব্য রাখেন সমবায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন নিপু।