বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) নির্বাচনী এলাকার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোলাম মো. সিরাজের গাড়ি বহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ হামলায় তিনটি মাইক্রো-জিপ গাড়িসহ ৫০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং ২০জন নেতাকর্মী আহত হওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় ধুনট উপজেলার ধুনট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
বিএনপির প্রার্থী গোলাম মো. সিরাজ বলেন, ‘ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে ধুনট উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর জন্য মঙ্গলবার পূর্ব নির্ধারিত পরিকল্পনা ছিল। নিমগাছী ইউনিয়নে প্রচারণা কাজে অংশ নিতে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের ধুনট সদরের হুকুম আলী বাসষ্ট্যান্ডে সমাবেত হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে সেখানে দলীয় নেতাকর্মীরা সমাবেত হতে থাকে। সকাল সাড়ে ১০টায় ধুনট বাজারে বিচ্ছিন্ন ভাবে ৪টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে নৌকা সমর্থক নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার পর বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করা হয়।’
জিএম সিরাজ অভিযোগ করেন, ‘পুলিশের অনুমতি পাওয়ার পর কয়েকশত মোটরসাইকেল নিয়ে ধুনট বাজারে প্রবেশ করলে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালায়। তারা দা, কুড়াল ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপস্থিতে হামলা করে তারা। তারা ৩টি প্রাইভেট মাইক্রো-জিপ গাড়িসহ অন্তত ৫০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২০জন বিএনপির নেতাকর্মী আহত হয়েছে।’
এদিকে, ঘটনার পর ধানের শীষের প্রার্থী গোলাম মো. সিরাজসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা হুকুম আলী বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থান নেয়। সেখানে তাদের ভাঙচুর হওয়া গাড়ি পরিদর্শন করেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার রাজিয়া সুলতানা। পরে হুকুম আলী বাসষ্ট্যান্ড ও ধুনট বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।’
ধুনট থানার এসআই শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলার চেষ্টা করা হলে পুলিশ তাদের উদ্ধার করেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
নড়াইল-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী এনপিপির কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারমান এ জেড এম ফরিদুজ্জামানের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে লোহাগড়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ আসনে ফরিদুজ্জামানের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন-আওয়ামী লীগ প্রার্থী ক্রিকেটার মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। এ হামলায় অন্তত চার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন ফরিদুজ্জাামান।
ফরিদুজ্জাামান বলেন, লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে আমাদের নির্বাচনী অফিসে হামলা চালানো হয়। অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে অফিসের চেয়ার, টেবিল, ফ্যানসহ অন্যান্য আসবাবপত্রের ব্যাপক ক্ষতি করা হয়েছে। এদিন বিকেলেই এখানে কর্মীসভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে ফরিদুজ্জাামান ওইদিন বিকেলে তার লোহাগড়ার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আকরামুজ্জামান মিলু, নেওয়াজ আহমেদ ঠাকুর নজরুল, মোহাম্মদ হোসেন মহত, কাজী সুলতানুজ্জমান সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম ফেরদৌস রহমান, সহ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুস সবুর, লোহাগড়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সালেহা বেগম, লোহাগড়া পৌর কাউন্সিলর মিলু শরীফ, লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল জমাদ্দার, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান,সাধারণ সম্পাদক আহাদুজ্জামান, এনপিপির কেন্দ্রীয় নেতা শরীফ মুনীর হোসেন, বদরুল ইসলাম, বেলাল হোসেন প্রমুখ।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। সহকারী রিটার্নিং অফিসার রাজিয়া সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘হুকুম আলী বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে প্রার্থীর ভাঙচুর গাড়ি পরিদর্শন করেছি। এসময় প্রার্থী মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’