আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সুইজারল্যান্ডের স্বাস্থ্যসেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রোচে হোল্ডিং এজির তৈরি অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করছে যুক্তরাজ্য। এ টেস্ট কিট একেবারে নিখুঁত ফল জানাতে পারে বলে পরীক্ষাগারে প্রমাণ পেয়েছে তারা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, তাই একে পরিস্থিতি পরিবর্তন করার জাদুর কাঠি হিসেবে দেখছে দেশটি। করোনাভাইরাস মহামারিতে বেহাল দশায় পড়া বিশ্বের মধ্যে পঞ্চম বৃহত্তম যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি এতে পুনরুদ্ধার পাবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন, উইল্টশায়ারের পোর্টন ডাউনে পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড পরীক্ষাগারে ফলাফলে এ কিটকে শতভাগ কার্যকর হিসেবে দেখানো হয়েছে। নিজ দেশের পরীক্ষাগারে ভালো ফল পাওয়ায় এর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে, এটি অনুরূপ রোগের চেয়ে সঠিক রোগের অ্যান্টিবডি শনাক্ত করতে পারে।
যুক্তরাজ্যের জুনিয়র স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যাডওয়ার্ড আরগার বলেন, ‘এর সম্ভাবনাকে গেম চেঞ্জার হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ কিট কেনার জন্য রোচের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করা হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ এসব কিট ব্যবহার করে পরীক্ষা শুরু হবে, তার দিনক্ষণ বলতে পারছি না।’
রোচের অ্যান্টিবডি পরীক্ষাটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছ থেকে গত ২৮ এপ্রিল ‘সিই মার্ক’ মূল্যায়ন পেয়েছে। এ ছাড়া ২ মে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) কাছ থেকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনও পেয়েছে।
প্রোটন ডাউন ল্যাবরেটরির ফলাফলের আগেই যুক্তরাজ্য কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় একে যথেষ্ট নিখুঁত হিসেবে ছাড়পত্র দেয়। যুক্তরাজ্যের করোনাভাইরাস পরীক্ষা কর্মসূচির জাতীয় সমন্বয়ক জন নিউটন বলেন, ‘এটা খুব ইতিবাচক খবর। কারণ, এ ধরনের নিখুঁত ও নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি পরীক্ষা অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য।’
রোচের পক্ষ থেকেও গতকাল বুধবার দ্রুত যুক্তরাজ্যে অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট পরীক্ষার বিষয়ে আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
রোচের তথ্যানুযায়ী, এ টেস্ট কিটে দক্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়। বাজারে যত টেস্ট কিট আছে, তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে নিখুঁত ৯৯.৮ শতাংশ সঠিক ফল দেখাতে পারে। এ স্তরের নিশ্চয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কোভিড-১৯–এর অ্যান্টিবডির মতো অনেকগুলো ভাইরাসের একই রকম অ্যান্টিবডি রয়েছে, যার মধ্যে সাধারণ সর্দি, অন্যান্য সার্স স্ট্রেন থাকতে পারে। যদি এ স্তরের নিখুঁত ফল না পাওয়া যায়, তবে অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারে।
দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্য সরকার লাখো টেস্ট কিট কেনার জন্য আলোচনা করছে। একই ধরনের অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট তৈরি করে থাকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাবোট ল্যাবরেটরিজ ও ইতালির ডিয়াসরিন।
অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় রোগ শনাক্তের পরিবর্তে কে কে আক্রান্ত হয়েছিল এবং কার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তা দেখাতে পারে। তবে শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি স্থায়ী রোগ প্রতিরোধক্ষম করে তোলে কিনা তা এখনো পরিষ্কার নয়।
সূত্র: প্রথম আলো