নিউজবাংলা ডেস্ক

নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য জেলা, উপজেলা ও মেট্রোপলিটন থানা সমূহে দলের কার্যকর দপ্তর এবং তৎপরতা যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে মাঠ পর্যায়ের কতিপয় নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপেশাদার, এখতিয়ার বহির্ভূত, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এবং হয়রানীমূলক কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে তা অবিলম্বে বন্ধের দাবিতে আজ ২৪ মে বুধবার বিকেল তিনটায় সিইসি বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি, এবি পার্টি।
এবি পার্টির আহ্বায়ক সাবেক জনপ্রশাসন সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর নেতৃত্বে এবি পার্টির একটি উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদল আজ বিকেল তিনটায় আগারগাঁও শেরেবাংলা নগরস্থ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা কমিশন সচিবের মাধ্যমে সিইসি বরাবরে একটি লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করেন। কমিশন সচিব জাহাঙ্গীর আলম সিইসি’র পক্ষ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন এবং এবি পার্টি নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন অভিযোগ মনোযোগ সহকারে শোনেন।

স্মারকলিপিতে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ বলেন, ২ মে ২০২৩ ইং তারিখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৯০ খ(১)(ক)(ই) এবং রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৬ উপ-বিধি (ঞ)(ই) অনুসারে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আবেদনকারী রাজনৈতিক দল সমূহের জন্য কেন্দ্রীয় দপ্তর, জেলা ও মহানগর, উপজেলা ও মেট্রোপলিটন থানা সমূহে দলের কার্যকর দপ্তর এবং তৎপরতা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়।
পরিদর্শন ও যাচাই বাছাইকালে জেলা, উপজেলা ও থানা নির্বাচনী কর্মকর্তাগণ যেসকল বিষয়ে তথ্য প্রমাণ ও প্রয়োজনীয় কাগজ, দলিল পত্র পর্যবেক্ষণ করতে চেয়েছেন এবি পার্টির স্ব স্ব অঞ্চল ও শাখার তৃণমূল নেতৃবৃন্দ তা যথাযথভাবে উপস্থাপন করেছেন। কোন কাগজপত্রের ব্যখ্যা প্রয়োজন হলে বা নিয়ম সংক্রান্ত ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাগণ সেজন্য সময় বেঁধে দিয়ে তা সংশোধিত আকারে দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছেন, যা এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ সন্তুষ্টির সাথে প্রতিপালন করেছেন।
কিন্তু কতিপয় জেলা, উপজেলা ও থানা কর্মকর্তা যাচাই বাছাইকালে নির্বাচন কমিশনের গাইড লাইনের বাইরে গিয়ে অপ্রাসঙ্গিক, অপেশাদার, অনৈতিক, রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট, হয়রানী ও প্রতিহিংসামূলক আচরণ করেছেন যা খুবই অনভিপ্রেত।
নেতৃবৃন্দ এসময় বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি নতুন রাজনৈতিক দল তৈরী ও পরিচালনা করা অত্যন্ত কঠিন ও জটিলতর একটি কাজ। সরকারী দল সহ বড় বড় দলগুলো কেউই চায়না নতুন রাজনৈতিক দলের বিকাশ ঘটুক। এর বাইরে সরকারী নানা সংস্থার নজরদারীর নামে হয়রানী ও ধমক, হুমকি নতুন রাজনৈতিক দল বিকাশের অন্তরায়। তাঁরা অভিযোগ করে বলেন সরকার দলীয় লোকদের বাঁধায় বেশ কিছু জায়গায় এবি পার্টির দলীয় অফিসের ব্যানার, সাইনবোর্ড খুলে ফেলতে হয়, সন্ত্রাসীরা বাড়ীওয়ালাকে হুমকি দিয়ে চুক্তি বাতিল করানো এবং দলীয় অফিস বন্ধ করে দেয়। থানায় অভিযোগ করলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ জিডি নিতে অস্বীকার করে এবং স্থানীয়ভাবে মিটমাট করার জন্য পরামর্শ দেন। এরকম বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে জেলা-উপজেলায় ১৪০ টির মত দলীয় কার্যালয় স্থাপন, হাজার হাজার কর্মীদের নিয়ে দলীয় তৎপরতা চালানো এবং দলকে মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলা অত্যান্ত কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। নেতৃবৃন্দ বলেন এতদ সত্বেও আমরা নির্বাচন কমিশনের গাইড লাইন মেনে পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে সবকিছু চালিয়ে আসছি। ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, সাম্প্রতিক যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলার সময় কিছু কিছু নির্বাচন কর্মকর্তাকে মনেহয়েছে তারা বিশেষ দলের প্রতি আনুগত্যশীল ফলে নানা অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে তারা আমাদের দলীয় নেতা ও কর্মী এবং অফিস ভবনের মালিকদেরকে হয়রানী করার চেষ্টা করেছেন। কোন কোন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ২৪ ঘন্টার নোটিসে কমিটির নেতাকর্মী বা ভোটার সদস্যদেরকে দলীয় কর্যালয়ে হাজির করার নির্দেশনা দেন; যেহেতু বিভিন্ন অঞ্চলে ফসল কাটার মৌসুম চলছে, বর্ষা আর পরিবহন সংকটে সেটা বাস্তবস্মত না। অনেকে চাকুরী কিংবা পারিবারিক ব্যস্ততা বা অসুস্থতার কারনে নিজের এলাকার বাহিরে থাকছেন। এসকল বাস্তব সমস্যা আমলে নিতে তারা নারাজ। তাদের অপেশাদার ও এখতিয়ার বহির্ভূত হয়রানীমূলক তৎপরতার কারণে এবি পার্টির নেতা কর্মী ও অফিস ভবনের মালিকদের মনে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তারা কতিপয় নির্বাচন কর্মকর্তার এহেন আচরণে ক্ষুব্ধ ও হতাশা ব্যাক্ত করেন। নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেন, আমরা মনেকরি এটা তাদের ইচ্ছাকৃত এবং হীন উদ্দেশ্যমূলক তৎপরতা যা এবি পার্টির নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা অবিলম্বে জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে কতিপয় কর্মকর্তার এহেন হয়রানী এবং হীন উদ্দেশ্যমূলক তৎপরতা বন্ধের জন্য নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্মারকলিপি প্রদানকাল এবি পার্টি নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, এবি যুব পার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, যুব পার্টির সদস্য সচিব শাহাদাত উল্লাহ টুটুল, কেন্দ্রীয় নেত্রী অ্যাডভোকেট সুলতানা রাজিয়া, গাজী নাসির,
শীলা আক্তার, সাইফুল মীর্যা, আব্দুল মান্নান, সরদার মশিউর রহমান মিলু, নাদিরা সুলতানা লিমা সহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এবং উপ-সচিব আব্দুল হালিম খান।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে কমিশনে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে ব্রিফিং করেন এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here