নিউজবাংলা ডেস্ক 

নির্বাচন ‘অবাধ ও গ্রহণযোগ্য’ হওয়া-না হওয়ার বিষয়ে ‘পাবলিক পারসেপসন’ (জনমত) জরুরি, তবে এর কোনও মানদণ্ড নেই উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘জনগণকে বলতে হবে— নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হয়েছে। সার্বিকভাবে জনগণ যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে হয়েছে বলে, তবেই নির্বাচন ক্রেডিবল হবে।’

সোমবার (২৭ নভেম্বর) নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারিক হাকিমদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনে আরেকটি দুর্ভাগ্যজনক বৈশিষ্ট হচ্ছে আমাদের নির্বাচনে বাইরে থেকেও থাবা-হাত এসে পড়েছে। তারা থাবা বিস্তার করে রেখেছে। আমাদের অর্থনীতি, আমাদের ভবিষ্যৎ, অনেক কিছুই রক্ষা করতে হলে এই নির্বাচনটাকে ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল করতে হবে।’

৫০ বছরের নির্বাচনি সংস্কৃতির বিষয় তুলে ধরার পাশাপাশি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সিইসি জানান, ‘নির্বাচন নিয়ে দেশ সংকটে আছে; বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে আছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সবাইকে সমভাবে দায়িত্বশীল হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। গণতন্ত্রে আমরা স্থিরভাবে এগোতে পারিনি। সংবিধান সমুন্নত রাখার জন্য সবাইকে সমভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

কঠোরভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ

এসময় কর্মকর্তাদের সাহসিকতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন সিইসি। ব্রাহ্মবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুরে উপ-নির্বাচনে সিল মারার ঘটনার পর নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার প্রসঙ্গও টানেন তিনি। বিচারিক হাকিমদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘সিল মারাটা নির্বাচনের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। পেশিশক্তির ব্যবহার করা, কালো টাকা ব্যবহার করা এবং কারচুপি করা, দীর্ঘদিন ধরে চর্চার মাধ্যমে একটা অপসংস্কৃতির চর্চা হয়ে গেছে। ক্রমান্বয়ে এ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমরা নিরন্তর চেষ্ট করছি। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশন যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।’

সিইসি জানান, ‘ভোটের ২১ দিনের আগে প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন না। হয়তো সভা করতে পারবে। প্রচারের সময় ডাবল এটেনশন দিতে হবে। এর আগে কোনও প্রচারণা চালাতে পারবেন না। প্রথমবারের মতো ৩০০টি নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি করা হয়েছে। এতে প্রমাণ হয়েছে সত্যিকার অর্থর আমরা ভিজিল্যান্সটা চাইছি। বিচারকরা যেভাবে সাহসী হয়ে ভিজিল্যান্স করতে পারবেন, অনেকে সেটা করতে পারবেন না। দেশের গণতন্ত্র রক্ষার্থে বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, সাহসিকতা দিয়ে যতদূর পারেন, সাহায্য করবেন। আমরা দেখতে চাই, ভোটাররা আসছেন, কেউ বাধা দিচ্ছে না। আমরা দেখতে চাই, ভোটাররা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে, লাইনটা যেন চলমান থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যেন দাঁড়িয়ে না থাকে। তারপর তারা ভোট দিয়ে বের হয়ে আসছেন কি-না।

নির্বাচন কমিশনকে প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও পুলিশের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘তাদের সহায়তা ছাড়া নির্বাচন কমিশন এককভাবে নির্বাচন করে না, করতে পারে না। সকলের আন্তরিক ও সৎ সাহহসিক সহায়তা আমাদের লাগবে। এজন্য আমরা আশা করবো, সবাই চোখ, কান খোলা রেখে সৎভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here