নিউজ বাংলা ডেস্ক:
আসামের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) নিয়ে যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি উত্তাল, তখন এ রাজ্যেও এনআরসি হবে বলে ঘোষণা দিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। খোদ কলকাতায় এসে মঙ্গলবার জোর দিয়ে বললেন, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসির করা বিজেপির দলীয় সিদ্ধান্ত।
আসামে এনআরসি প্রকাশের পর ১৯ লাখ মানুষের নাগরিকত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বাদ পড়া এসব মানুষের অনেকেই বাংলাভাষী। এনআরসির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, বাম ফ্রন্টসহ রাজ্যের বেশ কিছু রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা। তারা সবাই দাবি তুলেছে, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসির নামে কোনো বাঙালিকে তাড়ানো চলবে না। এই রাজ্যে কার্যকর করতে দেওয়াও হবে না এনআরসি। এই এনআরসির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভায় একটি প্রস্তাবও পাস হয়েছে। তবে ওই প্রস্তাব মানছে না বিজেপি। প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় বিজেপি এর বিরোধিতা করে অধিবেশন বয়কট করেছিল। বিজেপি এখনো অনড় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি কার্যকর করার প্রশ্নে।
মোদি সরকারের শততম দিন উপলক্ষে মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন স্মৃতি ইরানি। তুলে ধরেন বিগত ১০০ দিনে মোদি সরকারের সাফল্যের নানা দিক।
স্মৃতি ইরানি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই রাজ্যে অনুপ্রবেশকারী রুখতে কার্যকর করা হবে এনআরসি। মোট কথা, শুধু এই রাজ্য নয়, পুরো ভারতে কার্যকর করা হবে এনআরসি। কোনো অনুপ্রবেশকারীকে ঠাঁই দেওয়া হবে না পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের কোনো রাজ্যে। এ ব্যাপারে বিজেপি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আর বাংলায় এনআরসির ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এনআরসির মাধ্যমে এই বাংলা থেকে বিতাড়ন করা হবে অনুপ্রবেশকারীদের।
স্মৃতি ইরানি বলেন, একসময় এই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। অভিযোগও তুলেছিলেন, বামফ্রন্ট সরকার ভোট বাড়াতে অনুপ্রবেশকারীদের এই রাজ্যে ঠাঁই দিচ্ছে। কিন্তু এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অনুপ্রবেশকারীদের পক্ষে অবস্থা নিয়েছেন। এটা মমতার দ্বিচারিতা।
স্মৃতি ইরানি এ কথা বলেন, কাট মানি ফেরত দেওয়ার কথা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো স্বীকারই করে নিলেন যে তাঁর সরকার দুর্নীতিপরায়ণ।
স্মৃতি ইরানির অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্যের পৌরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বললেন, ‘স্মৃতি আজ যা বলছেন, কাল নিজেই বলবেন তা ঠিক নয়। এসব কথাকে বেশি গুরুত্ব না দেওয়াই ভালো।’