নিউজ বাংলা ডেস্ক: জেলার পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার বুধবার জানিয়েছেন, মোয়াজ্জেম হোসেনকে থানার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয়েছে। এছাড়া সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্তভার থানার হাত থেকে দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে। ফেনীর সোনাগাজীর মেয়ে নুসরাত এ বছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানির’ অভিযোগ এনে গত মার্চে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা করে নুসরাতের পরিবার।
এরপর ওই মাদ্রাসার ছাদে নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা হলে পুলিশ অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু আসামি গ্রেপ্তারে গরিমসি এবং কর্তব্যে অবহেলার দাবিতে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ সোনাগাজী থানার পুলিশ সদস্যদের অপসারণের দাবি জানান স্থানীয়রা।
শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে পুরো ঘটনা বর্ণনা করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, গত শনিবার সকালে তিনি ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রে আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে গেলে তাকে ছাদে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বোরখা পরা চার নারী তাকে মামলা তুলে নিতে বলে। তাতে রাজি না হওয়ায় ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
নুসরাতকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান পরে থানায় যে মামলা দায়ের করেন, সেখানে অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ-উদ-দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে ‘হাতমোজা, চশমা ও বোরকা’ পরিহিত আরও চারজনকে আসামি করা হয়।
কিন্তু অনেকেই এ ঘটনায় সোনাগাজীর পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতি ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ করেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে পুলিশ ছিল, তারপরও এ রকম ঘটনা কীভাবে ঘটল, দোষীরা কীভাবে পালিয়ে গেল এবং ওই ঘটনার পর আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের কেন তিন দিন সময় লাগল- সেই প্রশ্নও ওঠে।
তবে গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে পরিদর্শক মোয়াজ্জেম সে সময় স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি তারা আন্তরিকতার সঙ্গেই দেখছেন এবং নুসরাতের পরিবারকে পুলিশ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।