চলুন জেনে নেওয়া যাক আসল কারণ-
* এই সমস্যার সঙ্গে নার্ভ বা স্নায়ুর সম্পর্ক আছে। অনেকেরই স্নায়ুর সমস্যার কারণে হঠাৎ শোয়া অবস্থা থেকে উঠলে বা বসা অবস্থা থেকে উঠলে মাথা ঘুরে যায়। কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখে অন্ধকার দেখেন অনেকে। নার্ভের সমস্যা থেকেই এটি হতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এটিকে অবহেলা না করাই ভালো। আপনার যদি এই সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এখনই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ নার্ভের সমস্যা অবহেলা করলে তার থেকে ভবিষ্যতে বড় বিপদ হতে পারে।
* অনেকের সঙ্গে আবার ব্লাড প্রেশারের কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকে। রক্ত চাপ কম থাকলে অনেক সময় হঠাৎ করে উঠে দাঁড়ালে মাথায় সঠিক পরিমাণ রক্ত পৌঁছায় না। যার ফলে অনেকের এই মাথা ঘোরার সমস্যা হতে পারে। তাই আপনার এই সমস্যা থাকলে নিজের প্রেশার চেক করিয়ে নিন তারপর ডাক্তারের পরামর্শ মতো প্রেশার স্বাভাবিক করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
* ভার্টিগো থাকলেও হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘুরে যেতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে উচ্চতা থেকে ভার্টিগো হয়। পাহাড়ে বেড়াতে গেলে অনেকের এই সমস্যা দেখা যায়। বেশি উঁচু বাড়িতে উঠলেও অনেকের এই সমস্যা হয়। অনেকের লিফটে হয়। এটিও একপ্রকার স্নায়ুর সমস্যা। এই ক্ষেত্রেও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
* কোনও দুর্ঘটনার ফলে যদি কেউ দীর্ঘক্ষণ অজ্ঞান থাকে, তাহলে সেই সময়টার জন্য মাথার স্নায়ুতন্ত্রে স্থায়ী সমস্যা তৈরি হতে পারে। সেই সমস্যা থেকেও এই রোগ দেখা দিতে পারে।
* মাথা ঘোরাটাকে মস্তিষ্কের বিপদসংকেত হিসেবেই ধরা হয়ে থাকে, যা শরীরের বিভিন্ন অংশে নানাভাবে প্রকাশ ঘটায়। কারো ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডের বেশি উঠা-নাম, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, আবার কারো কারো হয়ত চোখের সমস্যা, অর্থাৎ অস্পষ্ট দেখা, মাথাব্যথা, বমি বা বমিভাবও হয়ে থাকে।
কাদের বেশি হয়?
নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ মিশায়েল বোনডর্ফ জানান, “বয়স বাড়ার সাথে মাথার সমস্যা বাড়তেও পারে, বিশেষ করে ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে। ক্ষেত্র বিশেষে মাথা ঘোরার ধরণও ভিন্ন হয়ে থাকে। কখনও হঠাৎ করে ঘূর্ণিপাক আবার কখনও একনাগাড়ে ক’দিনও থাকতে পারে মাথা ঘোরার সমস্যা।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যাদের মধ্যে বসা বা শোওয়া অবস্থা থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মাথার ঘোরার সমস্যা আছে, তাদের ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়া হতে পারে। অর্থাৎ সবকিছু ভুলে যাওয়ার অসুখ গ্রাস করতে পারে তাদের। এছাড়াও মাথায় নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে। হৃদযন্ত্র বিকল হওয়া, স্নায়ুর সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই যদি এই লক্ষণ থাকে, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া আবশ্যক।
কী করণীয়? কোন ডাক্তারের কাছে যাবেন?
প্রথমে বাড়ির ডাক্তার বা ‘হাউসফিজিশিয়ান’ থাকলে তার সঙ্গে কথা বলতে হবে। তখন তিনিই হয়ত নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাবেন। অথবা অবস্থা বুঝে পাঠাতে পারেন নিউরোলজিস্ট বা অন্য কোনও বিশেষজ্ঞের কাছে। তবে উচ্চ রক্তচাপ, নাড়ি পরীক্ষার পাশাপাশি চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছেও যেতে হতে পারে।সূত্র: ডয়েচে ভেলে, এই সময়