নিউজ বাংলা ডেস্ক:
বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। কিন্তু এই জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে বাংলাদেশের প্রকৌশলগত বা কারিগরি দক্ষতা আরো বাড়ানো প্রয়োজন। সেই পথই অনুসরণ করছে বাংলাদেশ। মিশনারি পদ্ধতিতে নির্ভরশীল হয়ে পড়লে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের তীব্র সংকট দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। সোমবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এডিবি আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য উপস্থাপন করে সংস্থাটি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এডিবি’র প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়াসুকি সাওয়াদা।
গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশের ইকোনমিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে।
এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে গতিশীল অর্থনীতি বাংলাদেশের। গত বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৫ শতাংশ। আগামীতে আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সমপ্রতি চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশসহ পাশের দেশগুলো উপকৃত হবে। সেই সুবিধা পেতে হলে বাংলাদেশকে দক্ষ জনশক্তিতে গুরুত্ব দেয়া দরকার।
সেমিনারে প্রধান অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেন, বর্তমান সরকার একটি ব্যবসাবান্ধব সরকার। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধে বাংলাদেশ উপকৃত হবে এবং সেই সুবিধা গ্রহণের জন্য যে সমস্ত পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেগুলো গ্রহণ করবে সরকার। নানা কারণে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক যুদ্ধে বাংলাদেশ সুবিধা পেতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, গার্মেন্টসহ বেশ কিছু খাতে এখন নতুন করে বিনিয়োগের অর্ডার আসছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধের সুবিধার পাশাপাশি শঙ্কাও রয়েছে। ২০২৪ সালের পর এলডিসি সুবিধা থাকবে না। সে ক্ষেত্রে নতুন সমস্যার সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ। প্রকৌশলগত উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশের তীব্র কর্মসংস্থানের সংকট দেখা দিতে পারে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা দরকার। ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন স্থাপনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইকোনমিক জোন স্থাপন করা হলে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন হবে ঠিকই তবে তা স্থাপন করতে কতটুকু খরচ হচ্ছে সে বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বাড়লেও বৈষম্যের দিকটাও বিবেচনাযোগ্য। অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে সামাজিক বৈষম্য। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা অভ্যন্তরীণ উদ্যোক্তাদের। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে উপকৃত হচ্ছে উচ্চ শ্রেণির লোকজন। উন্নত দেশে পরিণত হতে এই বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে বলেও মন্তব্য করেন মোস্তাফিজুর রহমান।