ক্রীড়া ডেস্ক :
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল। মঙ্গলবার ১৫ সদস্যের এই দলটি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে পরীক্ষিত ক্রিকেটারদেরই সুযোগ দেওয়া হয়েছে এই দলে। পেসার আবু জায়েদ রাহি ছাড়া সবাই বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে খেলেছেন। ঘোষিত দলের অনেকেই গত দুই বছর বাংলাদেশ দলে নিয়মিত খেললেও সাতজন ক্রিকেটারের জন্য এবারই প্রথম বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে।
অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ছাড়াও গত বিশ্বকাপ দলের তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, রুবেল হোসেন, সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমান এবারও দলে আছেন। তবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে অধিনায়ক মাশরাফির। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা আসরে প্রথম বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা হয় ম্যাশের। তবে দেশের মাটিতে ২০১১ বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পাননি দেশসেরা এই পেসার। এবার ক্যারিয়ারের চতুর্থ ও শেষ বিশ্বকাপ খেলবেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এ ছাড়া ২০০৭ থেকে বিশ্বকাপ খেলা তামিম, সাকিব, মুশফিক আছেন এবারও। ২০১১ থেকে বিশ্বকাপ খেলা মাহমুদউল্লাহ ও রুবেল হোসেন আছেন এবারের দলে। সর্বশেষ ২০১৫ বিশ্বকাপ দলের সাব্বির ও সৌম্য যাচ্ছেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলতে।
এবার দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন যাঁরা :
মুস্তাফিজুর রহমান : বাংলাদেশ দলের পেস আক্রমণের অন্যতম ভরসার নাম ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান। গত বিশ্বকাপের পর দেশের হয়ে অভিষেক হয় মুস্তাফিজের। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাননি বাঁহাতি পেসার। দেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৩টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেললেও এবারই প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে ফিজের।
মেহেদী হাসান মিরাজ : এবারের বিশ্বকাপ দলে স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২০১৭ সালে ওয়ানডে অভিষেক হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ দলের নিয়মিত সদস্য বনে যান মিরাজ। এখন পর্যন্ত ২৫টি ওয়ানডে খেলা মিরাজ এবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলবেন।
লিটন দাস : ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে তামিম ইকবালের সঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের সূচনা করবেন লিটন দাস। ২০১৫ সালে ওয়ানডে অভিষেক হয় লিটনের। ধীরে ধীরে দলে নিজেকে থিতু করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। দেশের হয়ে ২৭ ওয়ানডে খেলা লিটনের জন্য এটাই প্রথম বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে।
মোহাম্মদ মিঠুন : ডানহাতি ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুনের এবার নিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা হতে পারত। তবে ২০১৪ সালে অভিষেকের পর প্রত্যাশিত পারফর্ম করতে ব্যর্থ হওয়ায় দল থেকে ছিটকে যান মিঠুন। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেললেও ওয়ানডে দলে পুনরায় সুযোগ পেতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয় মিঠুনকে। সম্প্রতি দলের মিডলঅর্ডারে বড় এক আস্থার নাম হয়ে উঠেছেন তিনি। ১৫ ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার প্রথম বিশ্বকাপ-যাত্রা করবেন তিনি।
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন : পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের অভিজ্ঞতা বলতে ১০টি ওয়ানডে ম্যাচ। তবে এরই মধ্যে নিজেকে বাংলাদেশ দলের বড় সম্পদ হিসেবে প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছেন এই তরুণ। ডানহাতি পেস বোলিংয়ের পাশাপাশি এরই মধ্যে সাত-আট নম্বরে নেমে পরিস্থিতি অনুযায়ী বাঁহাতি ব্যাটিংয়ে ভালো কিছু ইনিংস খেলেছেন তিনি। ইংল্যান্ডের সিমিং কন্ডিশন বিবেচনায় অটোমেটিক চয়েস হিসেবেই দলে ঢুকে গেছেন প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া এই ক্রিকেটার।
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত : এবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ২৪টি ওয়ানডে খেলেছেন মোসাদ্দেক। ডানহাতি ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অফস্পিন বোলিং করতে পারার দক্ষতার কারণে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
আবু জায়েদ রাহি : এবারের বিশ্বকাপ দলে একমাত্র চমক বলা যায় পেসার আবু জায়েদ রাহিকে। দেশের হয়ে পাঁচটি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে খেললেও এখনো ওয়ানডে অভিষেক হয়নি ডানহাতি এই পেসারের। তবে ২৬ বছর বয়সী রাহির সাম্প্রতিক ফর্ম, সুইং বোলিং করতে পারার দক্ষতা ও আরেক পেসার তাসকিনের ইনজুরির কারণে প্রথম বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ হয়ে গেছে।