নিউজবাংলা ডেস্ক 

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সকাল ৮টা থেকে। মাঘের দ্বিতীয় দিনে শীতের সকালে উপস্থিতি কিছুটা কম দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে ভোটারদের সারি। রবিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে সিটি করপোরেশন এলাকার বেশ কয়েকটি ভোট কেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ভোটের পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোটাররা।

সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রথম দুই ঘণ্টায় ভোট কাস্টিংয়ের সংখ্যা তুলনামূলক কিছুটা কম। তবে ভোটকেন্দ্রে বুথের বাইরে ভোটারদের বেশ উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে সকাল ৯টার পর থেকে কেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটাররা দলে দলে উপস্থিত হচ্ছেন।

বাবুরাইল ব্যাপারীপাড়া বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে রমিজা খাতুন নামে এক ভোটার জানান, শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা শেষ করতে করতে ৮টা পার হয়ে গেছে। পরে সংসারের টুকটাক কাজ শেষ করে কেন্দ্রে এসেছেন ৯টার দিকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়বে বলেও মনে করেন তিনি।

তবে ইভিএমে ভোট দেওয়া সহজ এবং এতে নিজেদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা জানিয়েছেন তরুণ ভোটাররা।

সকাল ১০টায় শিশুবাগ স্কুলের ভোট কেন্দ্রে মাত্র ৫ শতাংশ ভোট পড়তে দেখা গেছে। এই কেন্দ্রের ভোটার বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। কেন্দ্রটির পাশেই তার বাসভবন। এসময় কেন্দ্রটির সামনের প্রতিটি লাইনে ভাটারের দীর্ঘ উপস্থিতি দেখা গেছে।

একই চিত্র দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা, ২০ নং বাবুরাইল ব্যাপারীপাড়া বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২১ বাবুরাইল ব্যাপারীপাড়া বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আদর্শ স্কুল ভোটকেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে।

২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর এটি তৃতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনে মেয়র পদে সাত এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৮২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার রয়েছেন ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৭ জন। প্রচার-প্রচারণায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও এ নির্বাচনকে ঘিরে এখন পর্যন্ত কোনও সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।

এই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। তারা হলেন-আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার (হাতি), খেলাফত মজলিশের এ বি এম সিরাজুল মামুন (দেয়াল ঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাও. মো. মাসুম বিল্লাহ (হাতপাখা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুল ইসলাম (ঘোড়া), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাত ঘড়ি)। এ ছাড়া সিটির ২৭ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটাররা মনে করছেন, মেয়র পদে মূল লড়াইটা হবে আইভী ও তৈমুরের মধ্যে।

জানা গেছে, মোট ভোটারের দুই লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৬ জন পুরুষ ও দুই লাখ ৫৭ হাজার ৫১১ জন নারী। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের চার জন ভোটার রয়েছেন। নগরীর ২৭ ওয়ার্ডের ১৯২ কেন্দ্রের এক হাজার ৩৩৩ কক্ষে ভোটগ্রহণ চলছে। এ জন্য নারায়ণগঞ্জে ২ হাজার ৯১২টি ইভিএম মেশিন আনা হয়েছে।

শিশুবাগ স্কুলের ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন বৃদ্ধ নাহিদা বানু। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ভোট দিতে এসেছি। কোনও সংঘর্ষ না হলে সুন্দরভাবে ভোট দিয়ে চলে যাবো। এখন পর্যন্ত কোনও সমস্যা দেখছি না। লাইনেও অনেক মানুষ দেখছি, ভালো লাগছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here