নিউজ বাংলা ডেস্ক :
চলে গেলেন ব্যারিস্টার আমিনুল হক। সাবেক মন্ত্রী বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার আমিনুল হক আজ সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান। তার মৃত্যুতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, সাবেক সংসদ সদস্য নাদিম মোস্তফা শোক প্রকাশ করেছেন।
জঙ্গিবাদে মদদ দেয়ার ব্যারিস্টার আমিনুল হককে জরুরি অবস্থার সরকারের আমলের দেয়া ৩১ বছর ৬ মাসের সাজার রায় বাতিল করেছিল হাইকোর্ট। একইসঙ্গে হাইকোর্ট ব্যারিস্টার আমিনুল হককে বেকসুর খালাস এবং এ মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
ব্যারিস্টার আমিনুল হক দীর্ঘদিন থেকে উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টসহ কয়েকটি রোগে আক্রান্ত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি হন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সেখান থেকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর পর ব্যারিস্টার হককে বাংলাদেশে এনে ঢাকার ইউনাইটেড হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়।
একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী। তিনি রাজশাহী-১ আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মন্ত্রীসভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আমিনুল রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার কেল্লাবাড়–ইপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ফাহিম উদ্দিন বিশ্বাস ও মাতার নাম আনোয়ারা খাতুন। শিক্ষাজীবনে তিনি আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমিনুল হক বিএনপির মনোনয়নে রাজশাহী-১ আসন থেকে নির্বাচন করে ৬১,৯৭৫ ভোট লাভ করেন ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহসীনকে পরাজিত করে প্রথমবারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির একদলীয় নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৮৩,৯৯৪ ভোট পেয়ে ও ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসনে ১,৩০,৬৩১ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন।
২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি ১০ অক্টোবর ২০০১ তারিখে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। ২৯শে অক্টোবর ২০০৬ তারিখ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৫ সালে আমিনুল মন্ত্রী থাকাকালীন বিএনপি নেতা রাজশাহী-৩ আসনের তৎকালীন সাংসদ আবু হেনা, আমিনুলের বিরুদ্ধে উদ্রবাদী নেতা বাংলা ভাইকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ২০০৭ সালের জুলাইতে তার অবর্তমানে রাজশাহীর জেলা আদালত আমিনুলকে ২০০৪ সালে বাগমারা উপজেলায় জঙ্গী সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশকে মদদ ও মানুষকে নির্যাতনের অভিযোগে ৩০ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে। ২০০৯ সালের জুলাইতে আমিনুল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ও তাকে জেলে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
আমিনুল হক ব্যক্তিগত জীবনে আভা হকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার ভাই এনামুল হক বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি।