নিউজ বাংলা  ডেস্ক

পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, ভোট কারচুপি ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বেলা পৌনে দুইটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১৭ জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। রোববার সকাল আটটা থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট নেওয়া শুরু হয়।

ভোট শুরু হওয়ার আড়াই ঘণ্টা পর প্রথম ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া খুলনা-৫ আসনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার। ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

মিয়া গোলাম পরওয়ার অভিযোগ করেন, ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া, এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া, দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনাগুলো রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করার পরও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তিনি ভোট বর্জন করছেন। তিনি বলেন, অবৈধ নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচন বৈধ করতে তিনি রাজি নন।

একই সময়ে ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-শালথা) আসনে বিএনপির প্রার্থী শামা ওবায়েদ ইসলাম নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ওই আসনের ১২৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০০টি কেন্দ্রে গতকাল শনিবার রাতেই ভোট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে যেসব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে, সেসব কেন্দ্রে বিএনপির কোনো পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে নিজেও ভোট দেননি শামা ওবায়েদ ইসলাম। ওই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।

ঢাকা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সালমা ইসলাম ভোট জালিয়াতির অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছেন। আজ দুপুর ১২টায় নবাবগঞ্জ উপজেলার কামারখোলায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রয়েছেন সালমান এফ রহমান।

ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বাগেরহাট-৩ আসনে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ ও বাগেরহাট-৪ আসনে জেলা জামায়াতের শুরা সদস্য মো. আবদুল আলীম বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে ভোট বর্জন করেন। বাগেরহাট-৩ আসনে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের স্ত্রী হাবিবুন নাহার আওয়ামী লীগের প্রার্থী। আর বাগেরহাট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী আমির এজাজ খান, খুলনা-৩ আসনে রকিবুল ইসলাম বকুল, খুলনা-৪ আসনের আজিজুল বারী হেলাল ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁরা তিনজনই বিএনপির প্রার্থী। খুলনা-১ আসনে পঞ্চানন বিশ্বাস, খুলনা-৩ আসনে মুন্নুজান সুফিয়ান এবং খুলনা-৪ আসনে আবদুস সালাম মুর্শেদী আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

খুলনা-১ আসনে বিএনপির পর জাতীয় পার্টির প্রার্থী সুনীল শুভ রায় নির্বাচন বর্জন করেছেন।
খুলনা-৬ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জামায়াতের খুলনা মহানগর আমির আবুল কালাম আজাদ ভোট বর্জন করেন। নাশকতার মামলায় খুলনায় কারাবন্দী আছেন তিনি। তাঁর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট লিয়াকত আলী ভোট বর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গাইবান্ধা-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মো. মাজেদুর রহমান ভোট বর্জন করেছেন। ওই আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
গাইবান্ধা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির কাজী মশিউর রহমান ভোট বর্জন করেছেন। এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোয়ার হোসেন চৌধুরী।

সাতক্ষীরা-২ আসনে মুহাম্মদ আবদুল খালেক ও সাতক্ষীরা-৪ আসনে জি এম নজরুল ইসলাম নির্বাচন বর্জন করেছেন। তাঁরা দুজনেই জামায়াত নেতা, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।
বরিশাল-৪ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নাগরিক ঐক্যের জে এম নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর ভোট বর্জন করেন। তিনি অভিযোগ করেন, নিজ কেন্দ্রে বাধার মুখে ভোট দিতে পারেননি।
দিনাজপুর-৬ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জেলা জামায়াতের আমির মো. আনোয়ারুল ইসলাম ভোট বর্জন করেছেন।
শরীয়তপুর-২ আসনে বিএনপির সফিকুর রহমান কিরণ ভোট বর্জন করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here