নিউজবাংলা২৪ডেস্ক: তিনি ছিলেন তারকাদের তারকা। মাধুরী দীক্ষিত, শ্রীদেবী থেকে শুরু করে বলিউডের সব বড় তারকাই তাঁর শিষ্য। বলিউডের অসংখ্য সুপারহিট গানের সঙ্গে তিনি জড়িয়ে আছেন নৃত্য নির্দেশক ও কোরিওগ্রাফার হিসেবে। জনপ্রিয় তারকারা তাঁকে গুরু হিসেবেই মানতেন, জানতেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ৭১ বছর বয়সে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন সরোজ খান। এ সঙ্গে শেষ হয়ে গেল বলিউডের নৃত্যের এক সোনালি যুগ।
ইরফান খান ও ঋষি কাপুরের মৃত্যু, সুশান্ত সিং রাজপুতের অকালে চলে যাওয়া, ওয়াজিদ খানের অকালমৃত্যুতে এমনিতেই বিষণ্নতা ছিল বলিউডে; তার মধ্যে গত ১৭ জুন সরোজ খানের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবরে অনেকেই চিন্তায় পড়ে যান। সরোজ খান অবশ্য মাঝে কিছুটা সুস্থও হয়েছিলেন। চিকিৎসা চলছিল। কোভিড–১৯–এর পরীক্ষা করা হয়েছিল, সেটি নেগেটিভ আসে। তবে শ্বাসকষ্ট ছিল। তাঁকে পুরোপুরি সুস্থ করার প্রস্তুতি চলছিল। তবে গতকাল দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি শেষবারের মতো নিশ্বাস ফেললেন পৃথিবীর বাতাসে। যার ফলে আবারও শোকের ছায়া বলিউডে। শেষ রাতে টুইটারে খবরটি জানিয়েছেন অক্ষয় কুমারসহ বেশ কয়েকজন তারকা। সরোজ খানের মৃত্যুর খবরটি প্রকাশ করেছে এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, হিন্দুস্থান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ বেশ কিছু ভারতীয় সংবাদ সংস্থা।
তবে তাঁর ক্যারিয়ারের পারদ ওপরে ওঠে শ্রীদেবী ও মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে কাজের পরই। ১৯৮৭ সালে ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’, ১৯৮৬ সালের ‘নাগিনা’, ১৯৮৯ সালে ‘চাঁদনি’, ১৯৮৮ সালে ‘তেজাব’ এবং ১৯৯০ সালে ‘থানেদার’ ছবি তাঁকে বলিউডে প্রতিষ্ঠা দেয়। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘হাম দিল দে চুকে সানম’, ‘দেবদাস’, ‘জাব উই মিট’–এর মতো ছবির নাচের দৃশ্যও তাঁর নির্দেশনায় সফল হয়েছে। শ্রীদেবী থেকে মাধুরী দীক্ষিত, ঐশ্বর্য রাই বচ্চন থেকে শুরু করে জ্যাকলিন ফার্নান্দেজ কিংবা কারিনা কাপুর খান, বলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করেছেন সরোজ খান। বহু বছরের বিরতির পর ফের তিনি তাঁর পছন্দের অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে কাজ করেন ছবিতে। ‘কলঙ্ক’ ছবির একটি গানে মাধুরীর কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করেছেন।
সরোজ খান দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এমনই জনপ্রিয় হয়েছিলেন যে নায়িকারা তিনি ছাড়া আর কারও সঙ্গে কাজ করতেও রাজি হতেন না। ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সরোজ খান একটি টিভি রিয়ালিটি শোর বিচারকও ছিলেন। তাঁর অনন্য সব নাচের মুদ্রা আজও সমান জনপ্রিয় বলিউড এবং সাধারণ মানুষের কাছে।