বিদেশ ডেস্ক :
পাঁচ মাসে মালয়েশিয়ায় আটক করা হয়েছে ৫ হাজার ২৭২ বাংলাদেশি শ্রমিককে। এ সময়ে বৈধ কাগজপত্র নেই এমন ২৩ হাজার ২৯৫ জন বিদেশি শ্রমিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে দেশটির অভিবাসন বিষয়ক বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছেন ওইসব বাংলাদেশি। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে মালয়েশিয়ার পত্রিকা ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
এতে বলা হয়েছে, বৈধ কাগজপত্র নেই যেসব বিদেশি শ্রমিকের কাছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে মালয়েশিয়া। তারই আওতায় সারা দেশে এ বছর ১লা জানুয়ারি থেকে ৪ঠা জুন পর্যন্ত ৫ মাসে মোট ৭৯০০টি অভিযান চালায় অভিবাসন বিভাগ। এর আওতায় পরীক্ষা করা হয় এক লাখেরও বেশি বিদেশি শ্রমিকের বৈধতা। এতে ২৩ হাজার ২৯৫ জন বৈধ কাগজহীন বিদেশি শ্রমিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ১লা জুন পর্যন্ত সময়ে ২৬ হাজার ১১৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে স্ব স্ব দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে কি পরিমাণ বাংলাদেশিকে জেলে দেয়া হয়েছে বা ফেরত পাঠানো হয়েছে তা নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ায় রয়েছেন প্রায় ৮ লাখ বাংলাদেশি। তার মধ্যে এক থেকে দু’লাখই অবৈধ বলে মনে করা হয়। তাদের নিয়মিত করতে বার বার মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু সে আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে তারা।
অভিবাসন বিষয়ক সংগঠনগুলোর মতে, মালয়েশিয়ান এজেন্টদের প্রতারণা এবং নিয়োগকারীদের নির্যাতনের ফলে সেখানে শ্রমিকরা অবৈধ হয়ে পড়েন। এমন কি এসব সংগঠন বাংলাদেশ থেকে নতুন করে শ্রমিক নেয়ার আগে অবৈধ হয়ে পড়া শ্রমিকদের বৈধকরণ করার আহ্বান জানিয়েছে মালয়েশিয়ার কাছে। রোববারের ওই বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন বলেছেন, তার মন্ত্রণালয় ব্যাপক ও সামগ্রিক একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে। এর আওতায় কাগজপত্রহীন বিদেশি অভিবাসীদের মোকাবিলা করা হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে ৫ বছরে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের এজেন্সিগুলোর মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা থাকবে। পাশাপাশি এর সঙ্গে যুক্ত থাকবে স্থানীয় কাউন্সিল এবং গ্রামীণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কাউন্সিলও। সমন্বিত এ পরিকল্পনার অধীনে অবৈধ শ্রমিকদের জন্য তাদের নিত্যদিনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে নেয়া অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়বে। মন্ত্রণালয় বলেছে, এ পরিকল্পনায় প্রধান পাঁচটি কৌশল হলো- এনফোর্সমেন্ট বা প্রয়োগ, লিগ্যাল ও পলিসি, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ শ্রমিকদের বিষয়ে ব্যবস্থাপনা এবং মিডিয়া-প্রচারণা।
মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, অবৈধ অভিবাসীরা জনগণের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। তাই তারা অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অপারেশন অব্যাহত রাখবে। বছরের ওই ৫ মাসে অভিবাসন বিষয়ক আইনের অধীনে ৬০৫ জন নিয়োগকারীর বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যেসব নিয়োগকারী অবৈধ শ্রমিকদের কাজে নেবে, এমন প্রতিজন শ্রমিকের জন্য তাদের ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার রিঙ্গিত জরিমানা অথবা এক বছরের জেল, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।