নিউজ বাংলা ডেস্কঃ 

টেক্সাসের সান অ্যান্টোনিও শহরের প্রান্তে ফেলে যাওয়া একটি ট্রাক থেকে কমপক্ষে ৫৩ জনের লাশ পাওয়া গেছে। ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

একজন দমকল কর্মী জানান, চার শিশুসহ যে ১৬ জন ওই ট্রাকে জীবিত ছিল তারা তীব্র গরমে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত থেকে সান অ্যান্টোনিওর দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটারের মতো। শহরটি মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মানব পাচারের প্রধান একটি রুটের অংশ।

মেক্সিকো সীমান্ত গলে যেসব অবৈধ অভিবাসী আমেরিকাতে ঢোকে পাচারকারীরা তাদেরকে সীমান্তের কাছাকাছি প্রত্যন্ত কোনো এলাকা থেকে ট্রাকে তুলে দূরের বিভিন্ন শহরে নিয়ে ছেড়ে দেয়।

সান অ্যান্টোনিও শহরের মেয়র রন নিরেনবার্গ বলেন, ‘এসব লোকজনের পরিবার রয়েছে। একটু সচ্ছল জীবনের জন্য চেষ্টা করছিল তারা।’

তিনি বলেন, ‘এটি ভয়াবহ একটি বিপর্যয় ছাড়া কিছু নয়, একটি মানবিক ট্রাজেডি।’

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট লোপেজ অব্রাডর এই ট্রাজেডির জন্য দারিদ্র্য এবং হতাশার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দুর্বলতাকে দায়ী করেছেন।

নিহতদের মধ্যে ২৪ জনের মত মেক্সিকোর নাগরিক, গুয়াতেমালার সাতজন এবং হন্ডুরাসের দুই নাগরিক রয়েছেন।

শহরের দমকল বাহিনীর প্রধান চার্লস হুড জানান, ‘সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে সান অ্যান্টোনিওর একটি শহরতলীতে একটি লাশ দেখতে পাওয়ার খবর পেয়ে হাজির হন জরুরি সেবা বিভাগের লোকজন। যদিও কোনো ট্রাকের দরজা খুলে দেখার কথা ছিল না আমাদের, কিন্তু আমাদের কল্পনাতেও ছিল না তার ভেতর সারি সারি লাশ পড়ে রয়েছে।’

তিনি জানান, ‘ট্রাকের চালক যখন সেটি ফেলে চলে যায়, সেটিতে কোনো শীতাতপ ব্যবস্থা চালু ছিল না। এমনকি ভেতরে কোনো খাবার পানিও ছিল না।’

গ্রীষ্মকালে সান অ্যান্টোনিওতে প্রচণ্ড গরম পড়ে। সোমবার শহরের তাপমাত্রা ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে গিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে তীব্র গরমে এবং পানিশূন্যতায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে এবং তদন্তের ভার দেয়া হয়েছে এফবিআইকে।

ট্রাকটি যেখানে পাওয়া গেছে তার খুব কাছে একটি কাঠ গুদামের একজন নিরাপত্তা কর্মী বলেন, ‘এই ঘটনায় তিনি বিস্মিত হননি।’

অ্যাডওয়ার্ড রেইনা বলেন, ‘পাশের রেললাইন দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সময় তিনি রাতের পর রাত দেখেছেন কিভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অভিবাসীরা চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ছে।’

সান অ্যান্টোনিওতে অবৈধ অভিবাসী মৃত্যুর ঘটনা আগেও হয়েছে, কিন্তু এত বড় মাপের ট্রাজেডি এই প্রথম। ২০১৭ সালে শহরের দক্ষিণে ওয়ালমার্টের একটি দোকানের সামনে ফেলে রাখা একটি ট্রেলারে ১০ জন অভিবাসীর লাশ পাওয়া গিয়েছিল।

এই শহরের দক্ষিণের পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তাটি টেক্সাসের সীমান্ত শহরগুলো পর্যন্ত বিস্তৃত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here