নিজস্ব প্রতিবেদক
সোমবার বিকেলে গণভবনে নির্বাচন দেখতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক এবং বিদেশি গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে ধানের শীষের তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণাই ছিল না, সাতটি আসন পেয়েছে ঐক্যফ্রন্টের নিজেদের দোষে। তিনি বলেন, এটি নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠা উচিত নয়।
নির্বাচন উপলক্ষে আসা বিদেশি পর্যবেক্ষক আর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শেখ হাসিনা তাদের বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জানতে চান।
আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে তাঁরা জানতে চান, নির্বাচনে ভোটের পার্থক্য এত বেশি হওয়ার কারণ কী? জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, একটি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে যে দলের প্রধান সাজাপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তি, তাহলে তাদের থেকে আর কী প্রত্যাশা করা যায়। এ ছাড়া তারা প্রতি আসনে চার-পাঁচজনকে মনোনয়ন দিয়েছিল, যেন তারা আসনগুলো নিলামে তুলেছে। যে বেশি টাকা দিতে পেরেছে সেই মনোনয়ন পেয়েছে এবং এ কারণে তারা তাদের অনেক জয়ী হওয়ার যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি। এমন অনেকেই মনোনয়ন পাননি।
‘আমি উদাহরণ দিয়ে দেখাতে পারি, ঢাকার ধামরাইয়ে জিয়াউর রহমান তাদের যোগ্য প্রার্থী ছিলেন, কিন্তু তিনি মনোনয়ন পাননি। নারায়ণগঞ্জের তৈমূর আলম খন্দকার, তিনিও তাদের বিজয়ী প্রার্থী হতে পারতেন। তাঁকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সিলেটে তাদের বিজয়ী হওয়ার মতো নেতা ইনাম আহমদ চৌধুরীকেও তারা মনোনয়ন দেয়নি।’
শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে। অন্যদিকে ঐক্যফ্রন্ট ভোটের মাঠেই ছিল না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যখন আপনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তখন তো আপনাকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করতে হবে। তারা এসবের কিছুই করেনি। আমরা অবাক হয়ে দেখেছি, তারা কিছু না করে চুপচাপ সময় পার করেছে। তাদের কতিপয় প্রার্থী সক্রিয় ছিল, তবে সবাই না। এটা আমাদের অবাক করেছে। কারণ আমরা কখনো দেখিনি, নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রার্থীরা এভাবে বসে থাকতে পারে।
‘তারা শুধু মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ভোট চেয়েছে। কোনো প্রপাগাণ্ডা করেনি, কোনো প্রচারপ্রচারণায় অংশ নেয়নি, কিন্তু কেন? তারা আসলে কী করতে চেয়েছিল? হতে পারে, তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে এভাবে নিস্ক্রিয় থেকে বোঝাতে চেয়েছে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হচ্ছে না। অথবা তাদের মনে অন্যকিছু রয়েছে। কারণ, ষড়যন্ত্র করাটা তাদের চরিত্রের মধ্যে রয়ে গেছে।’
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সভাপতি জানান, চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়াই হবে তাঁর মূল কাজ। এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কারো রাজনীতিতে বাধা দেওয়া তাঁর লক্ষ্য নয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের পর সব দলেরই তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর অধিকার রয়েছে। তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে কেউ তাদের বাধা দিতে যাবে না। ওসব আমাদের লক্ষ্য নয়, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের উন্নয়ন করা। তবে আমাদের খুব বাজে অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে।
নির্বাচনের সময় ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়া সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবহার অনেক বেশি হলে ইন্টারনেটের গতি কমে যেতেই পারে। অন্য আরেক প্রশ্নের উত্তরে জানান, নির্বাচনে অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেবে সরকার।