নিউজ বাংলা ডেস্ক :

এ সংস্থার সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. জাকির হোসেন খাঁন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে রোববার অপারেটরদের চিঠি পাঠিয়েছেন তারা।

দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব বলেছে, বিটিআরসির নির্দেশনা মেনে এ বিষয়ে তারা নিজেদের আয়ত্তের মধ্যে যে পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব, তা নেবে।

বিটিআরসির পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, “রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গুরুত্ব বিবেচনা, আইন শৃংখলা রক্ষা ও জনসুরক্ষার স্বার্থে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যাতে মোবাইল সুবিধা না পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আপনাদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল।

“কিন্তু রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকারী কমিটি এবং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে কমিশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কর্তৃক ব্যাপক হারে সিম/রিম ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছে।”

“এমতাবস্থায়, আগামী ০৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোনো প্রকার সিম বিক্রি, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কর্তৃক সিম ব্যবহার বন্ধ তথা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মোবাইল সুবিধাদি প্রদান না করা সংক্রান্ত সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করে বিটিআরসিকে  অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হল।”

বিটিআরসি কর্মকর্তারা জানান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের কাছ থেকে ‘জরুরি ব্যবস্থা’ নেওয়ার নির্দেশনা পেয়ে রোববার তারা অপারেটরদের চিঠি পাঠান।

সাম্প্রতিক এক সমাবেশে অনেক রোহিঙ্গার হাতে মোবাইল ফোন দেখা গিয়েছিল

বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের অনিবন্ধিত সিম বিক্রি বেআইনি। আর মোবাইল সিম নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজন হয় জাতীয় পরিচয়পত্র। নির্বাচন কমিশনে সংরক্ষিত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে আঙ্গুলের ছাপ মেলানোর পর ‘বায়োমেট্রিক’ নিবন্ধনের কাজ শেষ হয়।

এ নিয়ম অনুসরণ করা হলে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বৈধভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুযোগ পাওয়ার কথা নয়।

কিন্তু কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গার একটি বড় অংশের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে বিভিন্ন সময়ে।

এসব অবৈধ মোবাইল সিম চাঁদাবাজি, মাদক চোরাচালানসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

বিটিআরসির নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে অ্যামটব মহাসচিব এস এম ফরহাদ বলেন, “মোবাইল অপারেটররা সবসময়ই বিটিআরসির নির্দেশনা মেনে চলে। এ ব্যাপারে তারা নিজেদের আয়ত্তের মধ্যে সম্ভব যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।”

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডারের এনআইডি ডাটাবেইসের সঙ্গে বায়োমেট্রিক নিশ্চিতকরণের পরেই কেবল মোবাইল সিম সক্রিয় করা হয়।

অপারেটরদের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত করেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডারে কোনো রোহিঙ্গা নিবন্ধিত হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে তাদের করার কিছু নেই।

শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র এমনকি পাসপোর্টও করিয়েছেন বলে ইতোমধ্যে বেরিয়ে এসেছে।

রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম  বলেন, “সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, জাতীয় পরিচয় তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষিত তথ্যের সাথে বায়োমেট্রিক যাচাইকরণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরেই একটি মোবাইল সিম বিক্রয় করা হয়। অর্থাৎ মোবাইল সিম কিনতে হলে একজন ব্যক্তির বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে।

“আমরা বিশ্বাস করি যে, সিম সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যার সমাধান শুধু বৈধ নাগরিকদের আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) ও এনআইডি ডাটাবেইজে নিবন্ধন নিশ্চিত করার মধ্যেই নিহিত রয়েছে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here