নিউজ বাংলা ডেস্ক: রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ফিরে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে রোহিঙ্গারা। আর তাদের উস্কে দিচ্ছে এনজিওগুলো। দিন যতো যাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে রোহিঙ্গারা বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইয়াবা ব্যাবসা, মানবপাচার, খুন, ধর্ষণ চোরাচালান ও ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। রোহিঙ্গাদের উৎপাতে এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন প্রশাসনও উৎকণ্ঠায়।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, প্রথম দিকে রোহিঙ্গারা ত্রাণ সামগ্রীর আশায় ছুটে বেড়াতো এ ক্যাম্প থেকে সেই ক্যাম্পে। এক বেলা খাবারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। কিন্তু এখন পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। এনজিওরা সবকিছু এখন পৌঁছে দিচ্ছে তাদের ঘরে ঘরে। একই সঙ্গে ফিরে না যাওয়ার নানা কৌশল রপ্ত করাচ্ছে। সংগত কারণেই তারা এখন দাবি তুলছে- নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো অবস্থাতেই মিয়ানমারে ফিরে যাবে না। সহজেই ঘরে বসে ত্রান সামগ্রী পেয়ে যাওয়ায়-তাদের মাথায় চেপে বসেছে নতুন ভুত। কোনো কাজ ও সংসারের পিছুটান না থাকায় রোহিঙ্গারা নানা অপকর্মে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এদিকে দিন যতো যাচ্ছে ততোই অবনতির দিকে যাচ্ছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি রোহিঙ্গা শিবিরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। কক্সবাজার জেলা পুলিশের দেয়া তথ্যমতে গত দুই বছরে রোহিঙ্গা শিবিরে নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্ব›েদ্ব নিহত হয়েছেন ৪৩ জন রোহিঙ্গা। এছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে আরো ৩২ রোহিঙ্গা। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার পর থেকে নানা অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া ৪৭১ মামলায় আসামি ১০৮৮ জন। এছাড়াও ইতিমধ্যে পুলিশ প্রায় আরো এক হাজার রোহিঙ্গাকে সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, রোহিঙ্গারা এখন আর নিরীহ নেই। দিন যতো যাচ্ছে ততো তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। নানা অপরাধের ঘটনা ঘটাচ্ছে। জেলার আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। রোহিঙ্গারা মানবিক আশ্রয় পেয়েছে একথা তারা ভুলে গেছে। তারা এখন এলাকাবাসীর জন্য হুমকী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, কতিপয় এনজিও নিজেদের আখের গোছাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যেমন বাধা দিচ্ছে, তেমনি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যেতে এবং মিয়ামারে ফিরে যেতে অনাগ্রহ তৈরিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এসব এনজিওগুলো দীর্ঘ সময় দাতাসংস্থার অর্থ লুটপাট অব্যাহত রাখতে লন্ডাখালী এলাকায় নতুন করে ক্যাম্প নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছে।