নিউজ বাংলা ডেস্ক: ২৪ ঘন্টারও কম সময় হাতে। এরপরই স্পষ্ট হতে শুরু করবে দিল্লির মসনদের অধিকর্তা কে! এক মাসের ভোটযুদ্ধ শেষে এখন আমলনামা জঁপছেন ভারতের সব রাজনৈতিক দল ও নেতাকর্মীরা। যেন এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা। চারদিকে চাপা উত্তেজনা- কি ঘটছে ভারতে। কে গঠন করবে পরবর্তী সরকার! এসব প্রশ্নে এখন চায়ের কাপে ঝড়। বুথফেরত জরিপকে উড়িয়ে দিয়ে বিরোধী দলগুলো দৃশ্যত ‘মোদি থামাও’ অবস্থানে। ভোট গ্রহণের সময়ে যা না হয়েছে, ফল ঘোষণার পর বা আগে তার চেয়ে বেশি সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ভারতের কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে স্ট্রং রুমগুলোতে। এসব রুমে রাখা হয়েছে ইভিএম। ওদিকে বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার গঠন থামাতে সক্রিয় বিরোধী দলগুলো। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দবাবু নাইডু। তিনি সারাদেশের বিরোধী দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করে চলেছেন। উদ্দেশ্য বিজেপি বিরোধী একটি শক্তিশালী ফ্রন্ট তৈরি করা। অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও তেলুগু দেশম পার্টির নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু মঙ্গলবার এ নিয়ে সাক্ষাত করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জনতা দল (সেক্যুলার) প্রধান এইচডি দেবে গৌড়ার সঙ্গে। ওই বৈঠক স্থায়ী হয় দেড় ঘন্টারও বেশি। এ ছাড়া তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আলোচনা হয়েছে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের অনেক নেতা বিরোধীদেরকে তাদের পরিণতি মেনে নিতে আহ্বান জানিয়েছেন। ইভিএম’কে ব্যবহার করে বিতর্ক সৃষ্টি না করতে অনুরোধ করা হয়েছে তাদের প্রতি। এসব খবর দিয়েছে অনলাইন জি নিউজ।
আজ বুধবার ২২টি বিরোধী দলের নেতাদের উদ্বেগ শুনতে এবং তা নিয়ে আলোচনা করতে নয়া দিল্লিতে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন। বিরোধী ২২ দলের ওই নেতারা মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের প্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। তারা এ সময় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর বিষয়ে এবং ভিভিপ্যাট ব্যবহারের বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খান মঙ্গলবার বলেছেন, তার নির্বাচনী আসন রামপুর। সেখানে তিনি যদি কমপক্ষে ৩ লাখের বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী না হন তাহলে ধরে নিতে হবে যে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় নি ভারতের কোথাও।
পশ্চিমবঙ্গের চিত্রটা অন্য রকম। ভোট গণনার দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের রাজধানীতে ৪০০০ নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হবে। ভোট গণনা কেন্দ্রে এরই মধ্যে মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় দুই শতাধিক কোম্পানি। যৌথ বাহিনী সেখানে যেকোনো রকম সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় থাকবে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলো নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ভোট গণনা কেন্দ্রের প্রধান ফটকের বাইরে সিটি পুলিশের পাশাপাশি কলকাতা আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কলকাতায় ১৩টি স্থানে ভোট গণনা করা হবে।
পাঞ্জাবে অমৃতসর আসনে ‘পোলিং বুথ নম্বর ১২৩’-এ ভোট গ্রহণ চলছে। নির্বাচন কমিশন সোমবার এখানে নুতন করে ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। এখানে আজ বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।
ওদিকে আজ ২২ মে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে এক বৈঠক আহ্বান করেছেন ইউপিএ চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধী। এতে ভোটপরবর্তী কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে। জোটের সব সিনিয়র নেতা, সাধারণ সম্পাদক, পার্টির ‘ইনচার্জ’দেরও আহ্বান করা হয়েছে এ বৈঠকে। আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা আগামীকাল ২৩ মে। সূত্রমতে, চারজন নেতাকে নিয়ে একটি টিম গঠন করা হবে। তারা এনডিএ পার্টি বিরোধী একটি একীভূত ফ্রন্ট গড়ে তুলবেন।
ওদিকে ইভিএম নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে মঙ্গলবার সমালোচনা করেছেন ভারতের আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ। বলেছেন, বিরোধীদের পরাজয় মেনে নিতেই হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যদি আরো একবার ম্যান্ডেট পেয়ে যান তাহলে তাদের সামনে আর কোনো বিকল্প থাকবে না।