নিউজবাংলাডেস্ক:
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বরখাস্তকৃত এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন। তাকে ইতিমধ্যে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে তাকে র্যাব কার্যালয় থেকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে হাজির করা হয়। কোর্ট পরিদর্শক প্রদীপ কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রোববার এ ঘটনায় একই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামি লিয়াকত আলী। আদালতে টানা পৌনে পাঁচ ঘণ্টা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে এই লিয়াকতের গুলিতেই নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। সিনহা হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি লিয়াকত আলী।
লিয়াকত আলী ওই সময় টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ছিলেন। তিনি পুলিশের বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শকও।
৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিও চিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে আটক করে। পরে নীলিমা রিসোর্ট থেকে শিপ্রা দেবনাথকে আটক করা হয়। দুজনই পরে জামিনে মুক্ত হন।
সূত্র জানায়, ৩১ জুলাই রাতের ঘটনায় টেকনাফ থানায় করা পুলিশের মামলায় বলা হয়, সিনহা গাড়ি থেকে নেমে অস্ত্র তাক করলে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী গুলি করেন। এতে সিনহা মাটিতে লুটে পড়েন। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সিনহা হত্যা মামলার অগ্রগতি কতটুকু, জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা ও র্যাবের এএসপি খাইরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, অনেক দূর। তাহলে কী কারণে সিনহাকে হত্যা করা হলো এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামিরা এ ব্যাপারে কী বলেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে এএসপি খাইরুল ইসলাম বলেন, তদন্তের স্বার্থে কিছুই বলা যাবে না।
রিমান্ড শেষে এপিবিএনের তিন সদস্য কয়েক দিন আগে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে তাঁরা তিনজন জেলা কারাগারে অবস্থান করছেন। ঘটনার সময় এপিবিএনের তিন সদস্য শামলাপুর তল্লাশিচৌকির দায়িত্বে ছিলেন।
সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতকে গত শুক্রবার তৃতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ডে নেয় মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব। তাদের মধ্যে নন্দদুলাল আজ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিচ্ছেন। মামলার অপর আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।