ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চাই সবার অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমরা সংলাপে বসেছি।
সরকারপ্রধান আরও বলেন- দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, দেশের মানুষ তার পছন্দমতো ভোট দিতে পারুক, তারা তাদের পছন্দের সরকার বেছে নিক। সে কারণেই আমি ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছি।
শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত জেলহত্যা দিবসের আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারসহ জাতীয় ৪ নেতার হত্যাকান্ড ব্যক্তি কিংবা পারিবারিক ছিলনা, আদর্শের হত্যাকান্ড ছিল বলেনও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। এই সব হত্যাকান্ডের বিচার হওয়াতে দেশ অভিশাপমুক্ত হয়েছে কিন্তু ষড়যন্ত্র নির্মূল হয়নি বলে জানান তিনি। বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ৩রা নভেম্বর জেলহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ৩রা নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে চার জাতীয় নেতা বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামারুজ্জামানকে হত্যা করা হয়। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় বর্বরোচিত এ ধরনের হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে আমি কিন্তু একটা কথাও বলিনি প্রথমে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাদের কথা শুনেছি। শেষে গিয়ে আমি কথা বলেছি। সেখানেও বলেছি কোনটা কোনটা আমরা করতে পারি, কোনটা রাষ্ট্রপতির, কোনটা নির্বাচন কমিশনের, কোনটা কীভাবে করা যায়, এসব নিয়ে বলেছি।
আলোচনা আর আন্দোলন একসঙ্গে কীভাবে সম্ভব প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, যখন এই আলোচনা চলছে, তখনই দেখলাম আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়। একদিকে আলোচনা করবে, আবার অন্যদিকে আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া। তাহলে এটা কী ধরনের সংলাপ? আমাদের কাছে এটা বোধগম্য নয়।
জানি না, জাতি এটা কীভাবে নেবে। তবে আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক, উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।
খালেদা জিয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তো কাউকে রাজবন্দি করি নাই। তাই যদি করতাম তাহলে যখন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা শুরু হলো, তখনই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারতাম। গ্রেফতার করতে পারতাম। আমরা তো রাজনৈতিক কারণে কারও বিরুদ্ধে মামলা করিনি। খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছে তাদেরই আপনজন। তাদেরই বানানো রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন, সেনাপ্রধান মঈনুদ্দিন, সবাই তো বিএনপির নিয়োগ দেয়া লোক। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন তাদের তো একজন উপদেষ্টা মনে হয়। সেই মামলাটা তৈরি করে দিয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। তাদের দেয়া মামলা ১০টা বছর ধরে চলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে কিছু থাকলে ১০ বছর ধরে মামলা চলার কথা না। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে।
দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছরে প্রায় ছয় হাজারের মতো নির্বাচন হয়েছে। ইউপি, পৌর, উপনির্বাচন হয়েছে; কেউ কোনো কথা বলতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমাদের জাতীয় চার নেতা আমাদের মধ্যে নেই। জাতির পিতাও আমাদের মধ্যে নেই। তবে যে আদর্শ তারা রেখে গেছেন, সে আদর্শ অনুসারে দেশ গড়তে হবে।