ঢাকা: আগামী ৮ই নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এ কথা জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।

রবিবার সন্ধ্যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে বৈঠকে বসে চার কমিশনার, সচিবসহ একজন নির্বাচন কর্মকর্তা।

প্রায় দেড় ঘন্টার বৈঠক শেষে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিনক্ষণ জানান কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। তিনি জানান, সংবিধান অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার দিন থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত ৪৫ দিন সময় রাখা হবে।

এ সময় তিনি আরও জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তফসিলের সিদ্ধান্ত পেছানো হয়েছে।

পাশাপাশি, নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম বিধিমালার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে কমিশন এমনটা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কমিশনের সক্ষমতা অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। ইভিএম ব্যবহারের কারণে কোনও ভোটার যেনো ভোটকেন্দ্র থেকে ফিরে না যায় সে ব্যবস্থাও নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।’

তিনি জানান, কত আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে, সীমিতভাবে কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহারে কমিশনের পরিকল্পনা আছে।

এর আগে গতকাল নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন অাহমেদ জানান, আজ রবিবার, নির্বাচন কমিশন সভায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ চূড়ান্ত হতে পারে।

রবিবার বিকেলে কমিশনের সভা বসে। এ সভায় প্রথমবারের মতো অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করার সুযোগ রেখে বিধিমালা চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিধিমালা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ১১৯টি স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে, সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তফসিল ঘোষণা বন্ধের দাবি সংবলিত চিঠি দিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। শনিবার ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিটি নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়। ড. কামালের চিঠিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংলাপ অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, ৮ই নভেম্বরের পরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আবারও সংলাপের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল কমিশন সচিব জানান, ‘ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাব নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হবে। এরপরই সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। তিনি আরও জানান, ‘নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কমিশন সচিবালয়।’

রেওয়াজ অনুযায়ী কমিশন সভায় তফসিল চূড়ান্তের পর, একইদিন তা ঘোষণা করা হয়। ওইদিনই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে তফসিলের বিষয়টি জানিয়ে দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। তবে আজ তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা ক্ষীণ মন্তব্য করে একাধিক কমিশন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ (আরপিও)-এ সংশোধনীর পর ত্রুটি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ইভিএম বিধিমালা ও অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করার জন্য সময়ের প্রয়োজন। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও সংলাপ চলমান রয়েছে। তফসিল ঘোষণার ক্ষেত্রেও এ সংলাপকে গুরুত্ব দিচ্ছে ইসি। যদিও বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর সিইসি জানিয়েছিলেন, তফসিলের বিষয়ে রবিবার সিদ্ধান্ত হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here