নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  সরকার খুব অল্প সময়ের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষকদের সমস্যাগুলো দূর করবে।সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে যে বেতন বৈষম্য তা অনেকটাই সরকারের জানা আছে, এর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপনাদের দাবিগুলো পূরণ করা হবে। শুধু পরিকল্পনা মন্ত্রালয় নয়, এর সাথে অর্থ মন্ত্রালয়ও জড়িত।সরকারের এখন আর্থিক সক্ষমতা আছে, আমরা (সরকার) আপনাদের বিষয়ে আলোচনা করে  সমাধানের চেষ্টা করবো। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম (বাবেশিকফো)’ কর্তৃক আয়োজিত ‘শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ও বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরিকল্পনা মন্ত্রী এম,এ, মান্নান বলেন,আপনাদের কিছু সমস্যার বিষয় আমাকে খুব পীড়া দেয়, যেমন “একজন শিক্ষক বললেন বাড়িভাড়া ১০০০ টাকা।“ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের খুব সম্মান করেন। আপনাদের সমস্যা গুলো উনি কিছুটা জানেন, উনাকে একটু সময় দেন আপনাদের সমস্যার সমাধান হবে, ইনশাল্লাহ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরামে’র সভাপতি অধ্যক্ষ মো. মাইন উদ্দীন।

তিনি বলেন, ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে থাকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এই দিবসটি শিক্ষকদের অবদানকে স্মরণ করার জন্য পালন করা হয়। ইউনেস্কোর সূত্র ধরে তিনি বলেন, বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পালন করা হয়। যা বিশ্বের ১০০টি দেশে এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। এই দিবসটি পালনে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল (Education International – EI) ও তার সহযোগী ৪০১টি সদস্য সংগঠন মূল ভূমিকা রাখে। দিবসটি উপলক্ষে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রতি বছর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করে থাকে। এ বৎসর শিক্ষক দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় “শিক্ষা পুনরুদ্ধারের কেন্দ্রবিন্দুতে শিক্ষক” যা জনসচেতনতা বৃদ্ধির সাথে সাথে শিক্ষকতা পেশার অবদানকেও স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি বাংলাদেশে সরকারিভাবে দিনটি পালনের জন্য সরকারের নিকট অনুরোধ জানান।

অধ্যক্ষ মো. মাইন উদ্দীন আরো বলেন, কোভিড ১৯ এর কারণে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থা আজ বিপর্যস্ত। বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীরা আজ অনেক অর্থনৈতিক অনাটনে দিনাতিপাত করছে। বাংলাদেশে প্রাথমিক বাদ দিলে পরবর্তী শিক্ষাস্তরগুলোর ৯০ শতাংশের বেশি বেসরকারি। সেখানে পাঠরত শিক্ষার্থী ও কর্মরত শিক্ষক উভয়ই বৈষম্য-বঞ্চনার শিকার। তারপরও একথা স্বীকার করতে হবে, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যেটুকু ইতিবাচক অর্জন! তার সিংহভাগই শেখ হাসিনার হাত দিয়ে হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি নেই, প্রমোশন নেই, নেই অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধাদি।” শিক্ষক-কর্মচারীদের উপর ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির অযাচিত অত্যাচার আছে। ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে নিয়োগে অস্বচ্ছতা ও ক্ষেত্র বিশেষে দুর্নীতির অভিযোগের কথাও বলেন তিনি। তাই কমিটি প্রথা বাতিল করে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা উচিত।

‘বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরামে’র মহাসচিব মহাসচিব মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনা এখন সময়ের দাবি। সরকারের কাছে প্রস্তাব রেখে তিনি বলেন, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা, ভাতা স্কেল ভিত্তিক প্রদানসহ স্থায়ী অবসর ও কল্যাণ তহবিল গঠন করে সরকার যদি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আয় সরকারি কোষাগারে জমা নেয় এবং শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন কিছুটা সংস্কার করে আমাদের প্রস্তাব অনুযায়ী নির্ধারণ করেন। তাহলে অনায়াসেই এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ করা যায়।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক- কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী  মহাজোটের সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন আহমদ বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করন হলে এ দেশের ২ কোটি শিক্ষার্থীর লাভ এবং ১৬ কোটি মানুষের উপকার হবে। আমরা আশা করছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই মুজিববর্ষে, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করন করে ৫ লক্ষাধিক এমপিওভুক্ত শিক্ষকের দীর্ঘদিনের চাহিদা পুরন করবেন।

সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মতিউর রহমান দুলাল ও যুগ্ম সম্পাদক হোসনেয়ারা আহমেদ লতার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ মশিউর রহমান মৃধা,সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হানসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here