নিউজবাংলা ডেস্ক:
নতুন বছরেও কোনো সুখবর পাননি খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা। ১১ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দফায় চতুর্থ দিনের আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। তীব্র শীত উপেক্ষা করে চলা পাটকল শ্রমিকদের এই অনশনে ইতোমধ্যে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

বুধবার (১ জানুয়ারি) চতুর্থ দিনের মতো অনশনে রয়েছেন খুলনার সাতটি পাটকলের শ্রমিকরা। মৃত্যু আসলেও দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন বার বার। আর সে কারণে হাঁড় কাঁপানো শীতও তাদের মাঠ ছাড়া করতে পারছে না।

শ্রমিকদের টানা আমরণ অনশন কর্মসূচিতে খুলনার সাতটি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে দৈনিক প্রায় কোটি টাকার পাটপণ্য উৎপাদন হচ্ছে না। সেই সঙ্গে খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের বিআইডিসি সড়ক যেখানে শ্রমিকরা অনশন করছেন সেখানকার দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রয়েছে।

এরই মধ্যে প্রচণ্ড শীত ও ক্ষুধায় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জানান সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন। তিনি বলেন, বেশি অসুস্থদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের অনশন স্থানে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।

মুরাদ হোসেন বলেন, নতুন বছরেও আমাদের জন্য কোনো সুসংবাদ আসেনি। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) খুলনা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে শ্রমিক নেতাদের আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল। কিন্তু কোনো শ্রমিক নেতা যাননি। কেননা এর আগেও অনেক বৈঠক হয়েছে কিন্তু শ্রমিকদের কোনো দাবি পূরণ হয়নি।

অনশনরত শ্রমিকরা জানান, মাসের পর মাস মজুরি-ভাতাসহ অন্যান্য দাবি পূরণ না হওয়ায় শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাদের সংসার চলছে না। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই তারা বাধ্য হয়ে মিল ছেড়ে রাস্তায় নেমেছেন। সভা-সমাবেশ-বিক্ষোভ মিছিলে কাজ না হওয়ায় তারা আমরণ অনশন শুরু করেছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের পক্ষে ঘরে ফেরা সম্ভব নয় বলেও জানান তারা।

বিজেএমসি সূত্রে জানা যায়, খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ পাটকলের মধ্যে যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিল বাদে বাকি সাতটি পাটকলের উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ পাটকলগুলোতে প্রতিদিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৭২ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন। সেখানে চালু থাকা ওই দুটি পাটকলে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৮৬ দশমিক ৩৯ মেট্রিক টন। পাটকলগুলোতে প্রতিদিনের উৎপাদিত পণ্যের বাজার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা।

শ্রমিকদের দাবি নিয়ে গত ১৫, ২২ ও ২৬ ডিসেম্বর তিন দফা বৈঠক হলেও তাতে কোনো সুফল আসেনি। সর্বশেষ ২৬ ডিসেম্বরের বৈঠকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় ওই দিন ২৯ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আবারও আমরণ অনশন করার ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here