হুমায়ুন কবির সোহাগ ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :

একটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে কী করে একটি উন্মুক্ত ডাম্পিং স্টেশন বা ময়লার ভাগাড় গড়ে উঠতে পারে এবং দীর্ঘদিন ময়লা আবর্জনা ফেলা ও পোড়ানো হতে পারে, তা সত্যিই বিস্ময়কর। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভায় তা–ই হয়ে আসছে এবং এর কারণে সেখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার দশা। প্রতিদিন পৌরসভার যাবতীয় আবর্জনা সাত নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার এলাকায় ময়লার ভাগাড়ে ফেলা হচ্ছে, আবার মাঝে মাঝে এসব ময়লা আগুনে পোড়ানো হচ্ছে। এর ধোঁয়া আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে লোকজন নানাবিধ রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে। আবাসিক এলাকা, গ্রাম ও জনবসতিপূর্ণ স্থানে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় করার কোনো বিধান না থাকলেও এটি করা হয়েছে এবং তা টিকে আছে। ভাগাড়ের পাশেই রয়েছে নতুন বাজারের মুদি ও মাছ বাজার,শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। ময়লার ভাগাড় এর পাশেই আবার গরু-ছাগলের পৌরসভা কর্তৃক নির্ধারিত হাট বসে।

ময়লার দুর্গন্ধে এখানকার মানুষজন অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন।নতুন বাজারের ব্যবসায়ী অনেকেই মনে করেন, এভাবে খোলা কোনো স্থান তো ময়লার ভাগাড় হতে পারে না। ময়লার ভাগাড়ের চারপাশে অবশ্যই দেয়াল থাকতে হবে। এব্যাপারে কথা বলতে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি।উক্ত ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোক্তার হোসেন জানান, প্রথমে বাজারের ময়লাগুলো ওখানে একত্রিত করে পৌরসভার গাড়ি দিয়ে সব আবর্জনা আবার নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাওয়া হতো। আমি বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত আছি। এ ব্যাপারে মেয়রের সাথে আলাপ করে সেখানে একটি স্থায়ী ডাস্টবিন নির্মাণ করা হবে অতিসত্বর। দুঃখজনক হলেও এটা সত্যি যে আমাদের দেশে এখনো আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়নি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে আবর্জনা সংগ্রহ, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পুনরায় ব্যবহার এবং নিষ্কাশনের সমন্বিত প্রক্রিয়াকে বোঝায়। শহর বা গ্রাম এলাকাভেদে, আবাসিক বা শিল্প এলাকাভেদে আবর্জনা ব্যবস্থাপনার ধরন আলাদা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে দেখা যাচ্ছে, কোনো ধরনের নিয়ম অনুসরণ না করেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে ইতিমধ্যে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হয়েছে। উল্লেখ্য,কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম ২১ মাস নিজের ভাতার টাকা নাউঠিয়ে সেই টাকা জমিয়ে তিনি ৮৬ শতক জমি কিনেছেন পৌরসভার নামে শুধুমাত্র পৌর এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য । যা একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়।তার কেনা জমিটা জনবসতি থেকে দূরে হওয়ায় মানুষজনকে আর দুর্গন্ধ সইতে হবে না এমনটিই তিনি মনে করেন।অথচ তার এই মহতী উদ্যোগ কতটুকু সফল হয়েছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে সামগ্রিকভাবে দেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে বিজ্ঞানসম্মত করার কোনো বিকল্প নেই।তাই স্থানীয় জনগন মনে করেন কালীগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ময়লার ভাগাড়টিকে সাত নম্বর ওয়ার্ড নতুন বাজার এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here