হুমায়ুন কবির সোহাগ, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার যশোর রোড সংলগ্ন ডায়াবেটিক হাসপাতালের পাশে অবস্থিত নাজমা সার্জিক্যাল ক্লিনিকের আড়ালে “শান্তনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার” নামে অনুমোদনবিহীন একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রমরমা ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ পাওয়া যায়। ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর ব্যবসা পরিচালনার জন্য যেসব নিয়মনীতি ও অনুমোদনপত্রের প্রয়োজন হয় তার কিছুই নেই এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। দীর্ঘদিন ধরে ক্লিনিক ব্যবসার আড়ালে অনুমোদনহীন এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যাবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন নাজমা সার্জিক্যাল ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী গোলাম রব্বানী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যে ভবনটিতে ক্লিনিক রয়েছে তার সামনে ডায়াবেটিক হাসপাতালের বিল্ডিংয়ের শেষের দিকের নিচতালার একটি ছোটো ঘর ও তার সামনের বারান্দা গ্লাস দিয়ে ঘিরে করা হচ্ছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। আর এখানে প্যাথলজিসহ মোটামুটি সব ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন দুইজন ব্যক্তি।নেই কোনো ডাক্তার ও টেকনিশিয়ান।বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এখানে ডায়াগনস্টিকের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।নাজমা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভর্তি কয়েকজন রোগীর স্বজনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, তাদের রোগীর বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই করা হয়েছে। শুধু তায় নয় এই ক্লিনিকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে।ক্লিনিকের ভেতরে ময়লা,দুর্গন্ধ, ভেজা মেঝে ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে সর্বত্র বিরাজমান। এসময় ক্লিনিকটিতে কোনো ডাক্তার খুজে পাওয়া যায়নি।এমনকি ডিপ্লোমা নার্সও ছিল না।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এখানকার একজন স্টাফ জানান,এই ক্লিনিকে ডাক্তারের ব্যাবস্থাপত্র ছাড়া ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা চুক্তিতে ক্লিনিক মালিক এম আর তথা এ্যাবশন করান।সারা দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ঘোষিত অভিযানের সময়েও কৌশলে এই ক্লিনিক ব্যাবসায়ী পার পেয়ে যান।
নাজমা ক্লিনিক ও অনুমোদনহীন শান্তনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর স্বত্বাধিকারী গোলাম রাব্বানীর সাথে কথা হলে তিনি জানান,আমার এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন নায়। আমি অনলাইনে আবেদনও করিনি।এই ব্যাবসার জন্য যে পরিমাণ জাইগার প্রয়োজন সে পরিমাণ জায়গা না থাকায় সিমিত পরিসরে আমার ক্লিনিকে যেসব রোগী আসে তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষা এখানে করানো হয়।দ্রুত আমি অনুমোদননের জন্য আবেদন করবো।আমি ১৯৯৫ সাল থেকে ক্লিনিক ব্যবসার সাথে জড়িত।এই ক্লিনিকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এ্যাবশন করার অভিযোগ তিনি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। উল্লেখ্য, তিনি কালীগঞ্জ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ শুভ্রা রানী জানান,কালীগঞ্জ উপজেলায় শান্তনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নেয়।এসব অনুমোদনবিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান চালান হবে।
কালীগঞ্জে নিয়মনীতিবর্হীভূত সেসব ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিক রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করে তা বন্ধ করে দেওয়ার জোর দাবি উঠেছে সবমহলে।